গৌতম ব্রহ্ম: সব তীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর (Gangasagar) একবার। এবার সেই সুযোগ হয়েছে মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) নাগপুর শহরের বাসিন্দা লতা কুডুপোলের। সঙ্গী স্বামী জয়ন্ত কুডুপোলে। হাড় কাঁপানো শীতে শহর কলকাতা হয়ে বুধবার গঙ্গাসাগর মেলায় পৌঁছান লতা, জয়ন্তরা। এর মধ্যেই পূর্ব ভারতের মহাতীর্থের প্রস্তুতি দেখে কার্যত মুগ্ধ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নেতৃত্বে যেভাবে মেলা পরিচালনা করছে রাজ্য প্রশাসন, অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবক, তা কোথায় দেখেননি বলে দাবি করলেন ওঁরা। এমন ব্যবস্থা নাকি নজিরবিহীন। এদিন মমতার বক্তৃতা শুনেও মন্ত্রমুগ্ধ বাবুরাম ওয়াংখেড়ে, স্ত্রী প্রগতী ওয়াংখেড়ে। তাঁরাও নাগপুরের ৫৫ জন তীর্থযাত্রীরই অংশ। ওঁরা ঠিক করেছেন আগামিকাল ফেরার পথে কালীঘাট দর্শন করবেন। সবচেয়ে বড় কথা, একবার যাবেন মমতাকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে। সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ জানাবেন মুখ্যমন্ত্রীকে। গেলেই কি দেখা হবে? আরও প্রশ্ন, এতখানি মুগ্ধতা?
বুধবার গঙ্গাসাগরে গিয়ে কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা জানান মমতা বন্দ্যোপাধায়। মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, বারবার অনুরোধের পরেও গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা ঘোষণা করা হচ্ছে না। যদিও কুম্ভ মেলার সব খরচ উত্তরপ্রদেশ সরকারকে দেয় কেন্দ্র। বলেন, “আমাদের ১০ পয়সার বাতাসা দিয়েও কেউ সাহায্য করেনি।” এদিন রাজ্য সরকারের খরচে তৈরি একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মমতা। নতুন তিনটি হেলিপ্যাড-সহ একাধি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। জানান, “গঙ্গাসাগরে আসা তীর্থযাত্রীদের জন্য মুড়িগঙ্গায় সেতুর প্রয়োজন। কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেও সাড়া মেলেনি। শেষপর্যন্ত আমরা বাধ্য হয়ে চেষ্টা করছি নিজেদের মতো করে। ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ…।”
বাংলার লড়াকু মুখ্যমন্ত্রীর এই সোজাসাপটা বক্তৃতা ভাল লেগেছে নাগপুরের তীর্থযাত্রী দলের। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতার সময় দর্শকের ভিড়ে লতা ও জয়ন্ত কুডুপোলে এবং তাঁদের সঙ্গীসাথীরা ছিলেন। চেয়েছিলেন তখনই জানাবেন, গঙ্গাসাগরে দর্শন করে তারা মুগ্ধ। পরিবহণ পরিষেবা, স্বেচ্ছাসেবক, খাবার, পানীয়, ক্ষণে ক্ষণে ঘোষণা, স্যানিটাইজেশন, নিরাপত্তা। এমনকী পশ্চিবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে প্লাস্টিক ফ্রি বাংলার অন্যতম প্রাচীন এই মেলা! আরও একটি বিষয়, একাধিক ধর্মীয় পোস্টারে অভিভুত তারা। ‘প্রার্থনাই পথ’, ‘পূণ্যই প্রেরণা’, ‘মোক্ষলাভই লক্ষ্য’ ইত্যাদি। এতে তীর্থযাত্রীদের হৃদয়ে ধর্মীয় ভাব জাগ্রত হচ্ছে, বলছেন নাগপুর থেকে আসা দলটির অন্যতম সদস্য প্রকাশ ফালকে।
প্রকাশ জানান, এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দু’বার দেখেছেন। মহারাষ্ট্রে গিয়েছিলেন সেই সময় নেত্রী। মমতা যেভাবে বড় রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে লড়ছেন, সূদূর নাগপুর থেকেও তার খোঁজ রাখেন প্রকাশ। অতএব, বাংলায় এসে সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না। আগামীকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে, তাঁকে একবারটি ধন্যবাদ জানাতে কালীঘাটের বাড়িতে যাবেন ৫৫ তীর্থযাত্রীর দলটি। তার আগে কালীঘাটে মায়ের দর্শণ করবেন। পুজো দেবেন। লতা, জয়ন্ত, প্রকাশরা বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে মতো রাজনীতিবিদ ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য প্রেরণা। দেশ ও দশের ভালর জন্য এমন আরও রাজনীতিবিদ দরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.