ছবিটি প্রতীকী
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: লকডাউনের জেরে বাঙালির পাত থেকে কার্যত হারিয়ে যেতে বসেছে প্রিয় মাছ। ‘মাছেভাতে বাঙালি’র দুপুরের পাতে একটুকরো মাছের দেখা মেলাও এখন দুষ্কর। কারণ, গত রবিবার ‘জনতা কারফিউ’য়ের দিন অন্ধ্র থেকে শেষবারের জন্য মাছ এসেছিল পুরুলিয়ায়। তারপর আর গাড়ি ঢোকেনি। সেই রবিবারের মাছই কয়েকদিন বরফ দিয়ে শুক্রবার পর্যন্ত বিক্রিবাটা চলে। দেশি মাছ ধরতেও কেউ জাল ফেলছে না পুকুরে। ফলে শনিবার থেকে মাছ পেতে হাপিত্যেশ দশা এই শহরের বাঙালিদের।
শহরের বড়হাটের মাছের আড়তদাররা জানান, প্রায় এক কুইন্ট্যাল অন্ধ্রের মাছের চাহিদা রয়েছে এই শহরে। এখান থেকে অন্ধ্রের মাছ জেলার ব্লক সদর ও গ্রামাঞ্চলেও যায়। তবে রবিবার জনতা কারফিউয়ের দিন শেষ মাছ এলেও করোনা ভীতিতে ওই রাজ্য থেকে আমদানি খানিকটা কমে গিয়েছিল কয়েকদিন আগে থেকে। ফলে গত সপ্তাহের শেষ থেকেই চাহিদা অনুযায়ী এই শহরে মাছ আসছিল না।
তবুও কোনওভাবে চলছিল। কিন্তু এবার অন্ধ্রের কাতলার স্বাদ থেকে বঞ্চিতই হতে হচ্ছে জেলাবাসীকে। এই শহরের বড়হাটের মাছবিক্রেতা বাবু ধীবর শুক্রবার বলেন, “অন্ধ্রের গাড়ি এসেছিল সেই রবিবার। ওই গাড়িতে আসা মাছই কোনওভাবে এই কয়েকদিন বিক্রিবাটা করি। সেই
মাছও শেষ হয়ে গেল। এবার গাড়ি না এলে অন্ধ্রের মাছ দিতে পারব না।”
পুরুলিয়া শহর তথা জেলার অনেকাংশেই মাছের চাহিদা মেটায় অন্ধ্র। কিন্তু লকডাউনে গাড়ির চাকা যে নড়ছেই না। তাছাড়া বিভিন্ন হাত ঘুরে অন্ধ্রের যে মাছ পুরুলিয়ায় আসে, করোনা আতঙ্কে সেই মাছ থেকে দূরে থাকছেন ব্যবসায়ীরা। অন্ধ্রে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ১২ জন। সংক্রমণ আরও ছড়াচ্ছে। তাছাড়া এই বড়হাটের মাছ বিক্রেতারা বলেন, দেশি মাছও এই জেলার মৎস্যজীবীরা পুকুরে নেমে কেউ ধরতে চাইছেন না। ফলে শুক্রবারই অন্ধ্রের কাতলা মাছ কেজি প্রতি প্রায় তিনশো টাকায় ঠেকে যায়। তবুও মাছ কিনতে পিছপা হয়নি এই শহরের বাঙালি। বাঙালির পাতে মাছ ছাড়া যে চলেই না। তবে এবার, মৎস্যবিহীন ভোজনই হয়ত সারতে হবে আগামী কয়েকটা দিন।
ছবি: সুনীতা সিং।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.