সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: ফের প্রকাশ্যে বালির বেআইনি কারবার৷ যে বালি ইসিএল-এর কারখানায় পৌঁছানোর কথা, বেমালুম সেই বালি পথ ঘুরে চলে যাচ্ছে বেসরকারি কারখানায়। দিনের পর দিন এমনই ঘটনা ঘটছে দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায়।
অভিযোগ, ‘অন ইসিএল ডিউটি’ লেখা বালির ট্রাক ইসিএল-এর রয়্যালটি নিয়ে সেই বালি গিয়ে ফেলছে এক বেসরকারি ফ্লাই আ্যশের ইট তৈরির কারখানায়৷ এর ফলে যেমন রাজস্ব না দিয়েই বালি মিলছে ওই বেসরকারি ইট কারখানায়, তেমনই ট্রাকে ‘অন ইসিএল ডিউটি’ লেখা থাকলে রাস্তায় পুলিশি ঝামেলাও এড়ানো যাচ্ছে৷ অভিযোগ, এই স্টিকারকে হাতিয়ার করে বেআইনি বালি পাচারও চলছে অবাধে৷
[ টিউশন পড়তে গিয়ে বন্ধুর সঙ্গে মারামারি, বোতলের আঘাতে ছাত্রের মৃত্যু ]
গত বছর বিডিও এই রকম বালি বোঝাই ট্রাক আটকও করেছিলেন৷ কিন্তু ওই পর্যন্তই৷ তারপর থেকে দাপট একটু কমলেও বর্তমানে একই কায়দায় দেদার বালি পাচার চলছে৷ শুক্রবার সকালে ওই রকমই একটি ট্রাক দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের সরপিতে একটি ফ্লাই আ্যশের ইট তৈরির কারখানাতে ঢোকে৷ ট্রাকের সামনে জ্বলজ্বল করছে ‘অন ইসিএল ডিউটি’ লেখা বোর্ড৷ ট্রাকের চালক ধনঞ্জয় মণ্ডলকে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি জানান, প্রাইভেট রয়্যালটি চালান কেটে তার পরেই সে বালি ইটের কারখানায় ফেলা হচ্ছে৷ কিন্তু তার কাছে শুক্রবারের ইসিএল-এর চালানও ছিল৷ বেসরকারি চালানে কোনও তারিখ উল্লেখ ছিল না৷ তাতেই সন্দেহ আরও বাড়ে৷
[ খুনে অভিযুক্ত ছেলে পলাতক, অস্ত্র-সহ গ্রেপ্তার মা ]
এই ইসিএল-এর চালান দিয়েই দেদার বালি পাচার যে এখনও অব্যাহত তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক৷ বালির রাজস্ব রাজ্য সরকারকে দিচ্ছে ইসিএল। অথচ সেই বালি গিয়ে পড়ছে বেসরকারি হাতে৷ ইসিএল-এর সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, “ইসিএল-এর বালি হলে তাতে ইসিএল-এর চালান থাকবে৷ যদি সেই বালি ইসিএল-এ না পড়ে অন্য কোথাও যদি পড়ে তা স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের দেখা উচিত৷’’ অন্যদিকে, শুধু ইসিএল-এর চালানে বেসরকারি সংস্থাকে বালি দেওয়াই নয় ইসিএলের বোর্ড লাগিয়ে তাতেও দেদার বেআইনিভাবে বালি পাচারও চলছে খনি অঞ্চলজুড়ে৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রীতিমতো একটি সিন্ডিকেট কাজ করে এই পাচারচক্রে৷
দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের বিডিও শুভ সিনহা রায় জানান, “বেশ কিছু এই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে৷ কিছু তথ্যও এসেছে আমাদের কাছে৷ ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর ও পরিবহন দপ্তরকেও বলা হয়েছে৷ আমরাও পৃথকভাবে তদন্ত করে দেখছি৷”
ছবি: উদয়ন গুহ
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.