Advertisement
Advertisement

Breaking News

Asansol

গার্ডেনরিচ ট্রেলার মাত্র! আসানসোল-দুর্গাপুরে ঘনাচ্ছে আরও বড় বিপদ

ধসপ্রবণ এলাকায়ও চলছে বেআইনি নির্মাণ। বেআইনি নির্মাণের মদতদাতা কারা?

Illegal construction on rise, disaster in the making at Asansol-Durgapur

ধসে বিধ্বস্ত অন্ডালের হরিশপুর গ্রাম। ছবি: উদয়ন গুহ রায়।

Published by: Paramita Paul
  • Posted:March 19, 2024 10:54 pm
  • Updated:March 19, 2024 11:57 pm  

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: একদিকে ধস কবলিত এলাকায় বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে সরকারি তৎপরতা, অন্যদিকে একের পর এক বেআইনি নির্মাণ। রাতের অন্ধকারে ধস প্রবণ এলাকায় বেআইনি নির্মাণের মদতদাতা কারা? স্থানীয়স্তরে অভিযোগ, ইসিএল, স্থানীয় শাসকদলের নেতা কিংবা পুলিশ সবাই মিলিতভাবেই যুক্ত খনি এলাকায় গার্ডেনরিচের মতন মরণফাঁদ তৈরিতে। সত্যিই কী বাস্তব পরিস্থিতি এরকম?

  • রানিগঞ্জ। আসানসোল মহকুমার বহু পুরোনো জনপদ। প্রায় ১ লক্ষ ৮৩ হাজার ৪৬৫ জনসংখ্যা। বিরাট-বিরাট বহুতল। ঘিঞ্জি শহর। কিন্তু মাটির উপর কার্যত ঝুলছে রানিগঞ্জ।
  • জামুড়িয়া। আসানসোলের অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা। জনসংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ২৭৬ জন। মাটির নিচে পরিত্যক্ত কয়লা খনি থাকায় বিপজ্জনক এই এলাকার কিছু অংশ।
  • বারাবনি। ১ লক্ষ ২৭ হাজার ৫৪২ জন বাসিন্দা। এখানেও মাটির নিচে বহু পুরনো পরিত্যক্ত খনি থাকায় বিপজ্জনক এলাকা বলে চিহ্নিত বেশ কিছু অংশ।
  • সালানপুর। জনসংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার ৩৫৭। একই ভৌগোলিক চেহারা এখানকারও।
  • কুলটি। সবথেকে বেশি জনসংখ্যার এই এলাকারও বেশ কিছু অংশ অতি ধস প্রবণ এলাকা বলে চিহ্নিত।
  • একই হাল দুর্গাপুর মহকুমার অন্ডালেও।
  • হরিশপুর গ্রামে তো ধসের কারণে ভয়ে ভিটে ছেড়েছে বহু মানুষ। গ্রামের একটা অংশ এখন মাটির নিচে।

আসানসোল মহকুমার ইসিএলের খনি এলাকায় ১৪২টি এলাকা ধসপ্রবণ এলাকা বলে চিহ্নিত। কোল ইন্ডিয়ার ‘ডিরেক্টর জেনারেল অফ মাইনস সেফটি’ (ডিজিএমএস) এই এলাকা গুলোকে ধস প্রবণ এলাকা বলেই চিহ্নিত করেছে। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল রেস্ট্রিকশন অফ কনস্ট্রাকশন ইন আনসেফ এরিয়াস’ আইন ১৯৭৯ অনুযায়ী জেলাশাসক এই ধসপ্রবণ এলাকাগুলিতে নোটিস জারি করেন। ২০০৮-০৯ থেকেই ধসপ্রবণ এলাকায় যে কোনও নির্মাণের জন্যে অনুমতি দেওয়া বন্ধ করেছে আসানসোল কর্পোরেশন। তার পরেও ধসপ্রবণ এলাকায় একাধিক বেআইনি নির্মাণ হয়ে চলেছে। এমনই অভিযোগ করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। এর নেপথ্যে রয়েছে ইসিএল, স্থানীয় শাসকদলের নেতা কিংবা পুলিশের মিলিত চক্র। যেভাবে নির্মাণ চলছে তাতে গার্ডেনরিচের মতো বিপর্যয় এখানে ঘটে যেতে পারে সেখানে। একটা বহুতল নয়, বিপর্যয় ঘটলে গোটা গ্রামে চলে যেতে পারে মাটির নিচে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: যতকাণ্ড যোগীরাজ্যে, সরকারি টাকা হাতাতে দিদির কপালেই সিঁদুর দিলেন ভাই!]

ধসে বিধ্বস্ত অন্ডালের হরিশপুর গ্রাম। নিজস্ব চিত্র।

এখনও এই ১৪২টি ধস কবলিত এলাকায় প্রায় ১২ হাজারের মতো বাড়ি আছে। অধিকাংশই মানুষের বসবাসের জন্যে। বহুতল নয়। ধস প্রবণ এলাকায় কোনও নির্মাণের অনুমতি (বিল্ডিং প্ল্যান) দেয় না আসানসোল কর্পোরেশন। জমি ব্যবহার বা জমির উন্নয়নেরও অনুমতি দেয়না আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ। ধস কবলিত এলাকা থেকে মানুষদের সরাতে কোল ইন্ডিয়ার আর্থিক সহযোগিতায় পুনর্বাসন প্রকল্পে ৮৮১ কোটি খরচ করে ১০ হাজার ১৪৪টি বাড়ি তৈরি হচ্ছে। আবাসন দপ্তর তৈরি করছে। কিন্তু ওই বাড়িতে ধস কবলিত এলাকার মানুষদের যেতে অনীহা।

ধসে বিধ্বস্ত অন্ডালের হরিশপুর গ্রাম।

এখনও পর্যন্ত আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ আসানসোলে ৭১টি বাণিজ্যিক বহুতলের অনুমতি দিয়েছে। সবই ধস প্রবণ এলাকার বাইরে। ধস কবলিত এলাকায় বেআইনি নির্মাণ প্রসঙ্গে আসানসোল কর্পোরেশনের মেয়র বিধান উপাধ্যায় জানান,”ধস কবলিত এলাকায় নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয় না। বেআইনি নির্মাণ হলে তা কর্পোরেশন ও পুলিশ আটকায়। খবর পেলেই ভেঙে দেওয়া হয় বেআইনি নির্মাণ।” আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা কোনভাবেই ধস প্রবণ এলাকায় জমি ব্যবহার বা উন্নয়নের অনুমতি দিই না। সেখানে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে কি না তা দেখার দায়িত্ব আমাদের নয়। স্থানীয় পুরসভা ও পুলিশ এটা দেখবে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, “ধস কবলিত এলাকায় নির্মাণ বিপজ্জনক। মানুষের প্রাণ যেতে পারে। এই ধরণের কাজে কখনও দলের কর্মীরা থাকে না।”

[আরও পড়ুন: আরও বিপাকে রামদেব, পতঞ্জলির বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন মামলায় সুপ্রিম তলব যোগগুরুকে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement