ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: শিশু পাচার-কাণ্ডের মধ্যেই জলপাইগুড়িতে লাইসেন্সবিহীন হোমের হদিশ৷
ময়নাগুড়ির দোমোহনিতে রেলের পরিত্যক্ত স্টাফ কোয়ার্টারে বেআইনিভাবে চলছিল হোমটি৷ আলো-বাতাসবিহীন বসবাসের অযোগ্য ঘরে ঠাসাঠাসি করে উনত্রিশটি শিশুকে রাখা হত বলে অভিযোগ৷ খোঁজ পেতেই হোমটিতে হানা দেন শিশু পাচার নিয়ে তদন্তে আসা কেন্দ্রীয় দলের সদস্যরা৷ যদিও ওই হোমে গিয়ে কোনও শিশুর হদিশ মেলেনি৷ চন্দনার শিশু পাচারের কারবার সামনে আসতেই রাতারাতি ওই হোম থেকে শিশুদের সরিয়ে দেওয়া হয় বলে খবর৷ সেক্ষেত্রে কোথায় গেল শিশুরা? তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে৷ সব শিশুকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে কি না তা ঘিরেও তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা৷
হোমটি বন্ধে পদক্ষেপ করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস-এর সদস্যরা৷ সেইসঙ্গে জেলা প্রশাসনের নজর এড়িয়ে বছরের পর বছর কীভাবে হোমটি চলছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ ‘সঙ্ঘমিত্রা ট্রাস্ট’ নামে হোমটি ময়নাগুড়ির এক লাইন হোটেলের মালিক রাজু সেন চালাতেন৷ ওই হোমের নামে অনুদান সংগ্রহ করা হত৷ মূলত চা বলয়ের গরিব পরিবারের শিশুদের খাওয়া-পড়ার টোপ দিয়ে ওই হোমে নিয়ে আসা হত৷ এখানেও শিশু পাচারের জাল ছড়িয়ে ছিল কি না তা নিয়ে তদন্তের দাবি উঠেছে৷
কয়েকদিন আগেই দার্জিলিংয়ের সুখিয়াপোখরিতে এধরনের একটি বেআইনি হোমের হদিশ মেলে৷ জেলা প্রশাসনের তরফে হোমটি সিল করে দেওয়া হয়েছে৷ যদিও হোমের কর্ত্রী এখনও বেপাত্তা৷ তিনি নেপালে গা ঢাকা দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে৷ সুখিয়াপোখরির হোমটি নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে৷ প্রথমে ওই হোমের পনেরো শিশুর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না৷ পরে দেখা যায়, বেআইনি কারবারের পর্দা ফাঁস হয়ে গিয়েছে টের পেয়ে রাতারাতি শিশুদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দিয়ে গা ঢাকা দেন হোমের কর্ত্রী৷ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে লাইসেন্সবিহীন এরকম হোম আরও রয়েছে বলে অভিযোগ৷
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়াই যে ময়নাগুড়ির দোমোহনিতে সঙ্ঘমিত্রা হোমটি চলছিল, তা স্বীকার করে নিয়েছেন মালিক রাজু সেন৷ তাঁর দাবি, অনুমতির জন্য আবেদন করেছিলেন৷ কিন্তু অনুমোদন মেলেনি৷ অথচ তার পরও কেন হোমটি চালাচ্ছিলেন তিনি–প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে পারেননি লাইন হোটেলের মালিক৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.