নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: বাইরে কখনও ঝিরঝিরে বৃষ্টি। কখনও আবার অঝোরে ঝরছে বারিধারা। কিন্তু পুজোর যে মাত্র কয়েকদিন বাকি। তাই টিনের শেডে বা তাবুর ভিতরে আগুন জ্বালিয়ে,গ্যাসের ব্লো-ল্যাম্প দিয়ে ঠাকুর শুকানোর প্রাণপণ চেষ্টা করছেন এক মৃৎশিল্পীরা। কলকাতার কুমোরটুলি এখন প্রায় ফাঁকা হয়ে গেলেও জেলার মৃৎশিল্পীদের আঙিনা এখনও শূন্য হয়নি। সেখানে এখনও রয়েছে মাটির প্রতিমা। মণ্ডপে পৌঁছতে এখনও কয়েকদিন দেরি। তাই জেলার কুমোরপাড়ায় চলছে শেষ তুলির টান।
এক মৃৎশিল্পী জানালেন, কাজ এখনও অনেক বাকি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সমস্যায় রয়েছেন তাঁরা। দুর্গাপুজো দোরগোড়ায়৷ এর মধ্যে আবার নিম্নচাপ। ফলে কপালে গভীরভাবে ভাঁজ পড়েছে প্রতিমা শিল্পীদের। নিম্নচাপের কারণে সূর্যের তাপে প্রতিমা শুকানো বন্ধ। ফলে বাধ্য হয়েই কাঠ-কয়লা, ব্লো-ল্যাম্পের সাহায্যে প্রতিমা শুকাতে হচ্ছে। বাড়ছে প্রতিমা নির্মাণের খরচ। বৃষ্টি আরও চলতে থাকলে প্রবল ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছেন বলে জানিয়েছেন একাধিক শিল্পী। তাঁদের বক্তব্য, বাজার থেকে চড়া দামে গ্যাস কিনতে, কাঠ কয়লা জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকেই। বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
ব্লো-ল্যাম্পের সাহায্যে শুকাতে গিয়ে ফাটল সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিমাতে। তা মেরামতি করতে সময় লাগছে। ফলে তাড়াতাড়ি শেষ হওযার জায়গায় সময় আরও বেড়ে যাচ্ছে। তার উপর প্রতিমা লোডাররা বেশিরভাগ সুন্দরবন এলাকা থেকে আসেন। কিন্তু বৃষ্টি হলে এলাকা ছেড়ে আসতে চান না তারা। ফলে ঠাকুর ওঠানো-নামানোর ক্ষেত্রেও বড় সমস্যার মুখে পড়তে হয়। প্রতিমা শিল্পীদের বক্তব্য, নিম্নচাপের মধ্যে সময় মতো প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করতে প্রায় ১৫ শতাংশ খরচ বেড়ে যাচ্ছে তাদের। বনগাঁর প্রতিমা শিল্পী সিন্টু ভট্টাচার্য বলেন, “বর্তমানে থিমের পুজোর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় উদ্যোক্তারা তাড়াতাড়ি প্রতিমা নেওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে থাকেন। বাড়তি খরচের কথা ক্লাব কর্তাদের বলার উপায় নেই।” শিল্পী গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, “শ্রমিকের অভাব। রান্না ও অন্যান্য কাজ বন্ধ করে পরিবারের ছোট বড় সকলেই হাত লাগিয়েছে প্রতিমা তৈরিতে৷” মণ্ডপে প্রতিমা পৌঁছে দিতে আগুন জালিয়ে তাই দিনরাত কাজ করে চলেছেন রাকেশ পাল, গৌরব পাল, ভগীরথ সরকারের মতো শিল্পীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.