ফল প্রকাশের পর রামমোহন মিশন হাই স্কুলে উচ্ছ্বাস। ছবি: পিন্টু প্রধান
স্টাফ রিপোর্টার: কারও লক্ষ্য আইআইটি। কেউ আবার ছক ভেঙে ঢুকে পড়তে চান সাংবাদিকতার জগতে। সোমবার প্রকাশিত হয়েছে ২০২৪ সালের দশম (আইসিএসই) ও দ্বাদশের (আইএসসি) ফলাফল। তাতে ভালো ফল করা রাজ্যের কৃতীরা জানালেন তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।
প্রথা ভেঙে এ বছর দেশ ও রাজ্যভিত্তিক মেধাতালিকা প্রকাশ করেনি কাউন্সিল ফর দ্য ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগজামিনেশন (সিআইএসসিই)। যদিও ফলাফলের বিচারে দশমে এ রাজ্যে একেবারে শীর্ষে অন্ততপক্ষে ৯ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রত্যেকেরই প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৮ (৯৯.৬০)। দ্বাদশেও শীর্ষ স্থানে রয়েছে রাজ্যের দুই কৃতী ছাত্রী।
আইসিএসই-তে ৯৯.৬০ শতাংশ পেয়ে নিজের স্কুলেও প্রথম হয়েছে ক্যালকাটা গার্লস হাই স্কুলের তিরুমালা ঘোষ। দুর্দান্ত রেজাল্ট নিয়ে তিরুমালা বলে, “সত্যিই আমার জন্য এটা একটা বড় সাফল্য। আমি চেষ্টা করেছিলাম। পরিশ্রমের ফল পাওয়া গেলে ভালোই লাগে।” পড়াশোনার পাশাপাশি ভরতনাট্যম নাচ করতে ভালোবাসে এই কৃতী। একাদশ-দ্বাদশে বাড়বে পড়াশোনার চাপ। লক্ষ্য যে আইআইটি। তাই বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি জেইই মেন ও জেইই অ্যাডভান্সডের জন্য প্রস্তুতিও নেবে। কিন্তু, চাপ যতই বাড়ুক, ভালোবাসার নাচ থামবে না বলেই জানিয়েছে তিরুমালা।
একই নম্বর পেয়েছে লা মার্টিনিয়ার ফর বয়েজের হর্ষিত আগরওয়ালও। একাদশে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে ইচ্ছুক হর্ষিত গান শুনতেও ভালোবাসে। আইসিএসই-তে ৯৯.৬০ শতাংশ পাওয়াদের তালিকায় রয়েছে কলকাতার সাউথ সিটি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের আর্য সরকার, হাওড়ার ডন বসকো স্কুলের নীলাদ্রি দিন্দা, হুগলির গসপেল হোম স্কুলের অভিমিতা চক্রবর্তী, বারাকপুরের সেন্ট লুউকস ডে স্কুলের তমাল রায় মহাপাত্র, দিল্লি পাবলিক স্কুল নিউটাউনের সোহন ঘোষাল, বারাকপুরের সেন্ট জেভিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের অনুষ্কা ঘোষ ও দিল্লি পাবলিক স্কুল নিউটাউনেরই আর এক ছাত্রী আরুষি ভাদুড়ীও।
সাধারণত বিজ্ঞান শাখার পড়ুয়াদেরই ঝুলিতে অনেক নম্বর আসতে দেখা যায়। আইএসসি-তে ৩৯৯ নম্বর (৯৯.৭৫ শতাংশ) পেয়ে সেই ধারণাকে কার্যত ভুল প্রমাণ করে দিয়েছে বিবেকানন্দ মিশন স্কুলের ঋতিশা বাগচী। সময়-সুযোগ পেলেই গল্পের বইয়ের পাতায় ডুব দেওয়া ঋতিশা জানিয়েছে, দ্বাদশে তাঁর বিষয় ছিল সাইকোলজি, সোশিওলজি, ইতিহাস, ইংরেজি ও লিগাল স্টাডিজ। ঋতিশার কথায়, “বরাবরই শুনে আসছি, আর্টস নিয়ে পড়ছ কেন? সায়েন্স নিয়ে পড়লে ভালো হত। কিন্তু, আমার যেটা ভালো লাগে আমি সেটাই পড়ব। এখন সায়েন্সের থেকে আর্টসে অনেক সুযোগ আছে। তাই আর্টসে এত ভালো নম্বর পেয়ে খুব ভালো লাগছে।”
ভবিষ্যতেও কলা শাখার বিষয় নিয়েই পড়তে আগ্রহী এই ছাত্রীর ছক ভাঙারও পরিকল্পনা রয়েছে। ঋতিশা বলে, “আমি ইতিহাস নিয়ে পড়ব। তার পরে আমার সাংবাদিক হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। আমি ছোটবেলা থেকেই লিখতে ভালোবাসি।” লা মার্টিনিয়ার ফর গার্লসের রিভ্যা সরাফও ৩৯৯ নম্বর (৯৯.৭৫ শতাংশ) পেয়েছেন।
এ বছর দশম ও দ্বাদশ, দুটিতেই গোটা দেশে ফলাফলের বিচারে এগিয়ে রয়েছে ছাত্রীরা। বঙ্গেও তার অন্যথা হয়নি। বেড়েছে মোট পাসের হারও। এ বছর ছাত্রীদের পাসের হার ৯৯.৬৫ শতাংশ। ছাত্রদের ৯৯.৩১ শতাংশ। ছাত্র ও ছাত্রীদের পাসের হার যথাক্রমে ৯৯.০৭ ও ৯৯.৪১ শতাংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.