ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: দেশের জনগোষ্ঠীর মধ্যে কোভিড (Covid) প্রতিরোধক্ষমতা বা সেরো পজিটিভিটি যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়েছে। এমনটাই বলছে দেশের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সংস্থা আইসিএমআর (ICMR)। প্রায় একইরকম অভিমত রাজ্যের বিশেষজ্ঞদেরও। দু’বছর আগে দেশের সংক্রমণ শুরুর সময় থেকেই সেরো পজিটিভিটি যাচাই করেছে আইসিএমআর। অন্তত তিনদফায় এমন যাচাই হয়েছে। তবে গত এক বছরের বেশি সময় এই পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশেষ করে ভ্যাকসিন চালু হওয়ার পর থেকে এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি আইসিএমআর। কিন্তু কেন?
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে একই সময়ে জনগোষ্ঠীর থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে দেখা হয় কতভাগের মধ্যে কোভিড প্রতিরোধ ক্ষমতা বা অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। সেই অনুযায়ী তথ্য প্রকাশ করেছিল আইসিএমআর। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, প্রথমত, জনগোষ্ঠীর মধ্যে সেরো পজিটিভিটি তৈরি হলেও কোভিডের অন্য ভ্যারিয়েন্ট থেকে ফের সংক্রমণ হতেই পারে। এটা যেমন একটা দিক, তেমনই ভ্যাকসিন শুরু হওয়ার পরে গোটা হিসাবটাই বদলে গিয়েছে। দেশের একটা বড় অংশের মানুষ যখন ভ্যাকসিন পেয়ে গিয়েছেন সেই সময় এই ধরনের পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয়তা অনেকটাই কমে গিয়েছে। যেখানে ধরে নেওয়া হচ্ছে জনগোষ্ঠীর প্রায় ৬৫ শতাংশ ইতিমধ্যে কোভিড প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করেছেন।
আইসিএমআরের বিশেষজ্ঞ গবেষক ডা. সমীরণ পণ্ডার কথায়, “ওমিক্রনের জন্য নয়। তার অনেক আগে থেকেই দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে। দ্বিতীয়ত, গত একবছর ধরে যেভাবে দেশে আঠারো বছর থেকে বয়স্ক ও কো-মর্বিডদের করোনার দু’টি ডোজ দেওয়া হয়েছে তাতে প্রায় সবার মধ্যেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। এই নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই।”
সমীরণবাবু তথ্য তুলে ধরে বলেন, প্রথম দফার সমীক্ষায় দেখা যায় দেশের ০.৭ শতাংশ মানুষের মধ্যে সেরো পজিটিভিটি তৈরি হয়। দ্বিতীয় দফার সমীক্ষায় দেখা যায়, ৭ শতাংশের মধ্যে সেরো পজিটিভিটি তৈরি হয়। তৃতীয় দফার সমীক্ষায় প্রায় ২৫ শতাংশ এবং চতুর্থ দফায় প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। তবে এর মধ্যে ভ্যাকসিনের জন্য কত শতাংশ বা সংক্রমণের ফলে কত শতাংশের মধ্যে স্বাভাবিক প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়েছে তা বোঝার প্রয়োজনীয়তা নেই। উদ্দেশ্য ছিল করোনা থেকে মৃত্যু কমানো। এবার সেই কর্মসূচি অনেকটাই কাজে দিয়েছে।
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আশিস মান্নার কথায়, “ডেল্টা, ডেল্টা প্লাস বা ওমিক্রন ছাড়া অন্য কোনও নতুন ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত হতেই পারে। দ্বিতীয়ত, দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরে রাজ্যের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.