সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: ছোট ছোট বাচ্চাদের জন্য বরাদ্দ করা চাল, ডাল, তেল থেকে শুরু করে রান্নার যাবতীয় সামগ্রী চুরি করে চড়া দামে বাইরে বিক্রি করার অভিযোগ উঠল ICDS কর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার সাগর-মাধবপুরের একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই অভিযুক্ত মহিলাকে বেধড়ক মারধর করে স্থানীয়রা। বাসিন্দাদের ক্ষোভের হাত থেকে রেহাই পাননি মহিলার স্বামীও। দীর্ঘক্ষণ তাঁদের আটকে রাখা হয় একটি ঘরে। খবর পেয়েই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কাকদ্বীপের মহকুমা শাসক।
প্রায় চার বছর ধরে শনিবার করে পড়ুয়াদের খাবার দেওয়া হয় না পাথরপ্রতিমা ব্লকের রামগঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের সাগর-মাধবপুর ওই অঙ্গনবাড়ি কেন্দ্র। গত ১৪ জানুয়ারি থেকে কেন্দ্রটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেলেও নিয়মিত শিশুদের জন্য চাল, ডাল, তেল নিয়মিতই আসে। সরকারি বরাদ্দের সেইসব দ্রব্য বাচ্চাদের না খাইয়ে বাইরে বিক্রি করছেন ICDS কেন্দ্রের কর্মী হৈমবতী মাইতি ও তাঁর স্বামী। বিষয়টি জানাজানি হতেই বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁদের।
এবিষয়ে অভিভাবক ঝর্ণা বেরা জানান, হৈমবতী মাইতি সরকারের বরাদ্দ করা চাল, ডাল, সয়াবিন ও তেল রান্নার কাজে না ব্যবহার না করে বিক্রি করে দিচ্ছিলেন। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ কিছুই জানতেন না। কাণ্ডকারখানা ধরা পড়ে যাওয়ার পর বিষয়টি পঞ্চায়েত প্রধান ও সিডিপিওকে জানানো হয়েছিল। তখনই লিখিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১৮০ কেজি চাল, ৩৮ কেজি ডাল, ২৩ কেজি সয়াবিন ও ৮ কেজি তেল ওই কেন্দ্রে আসার পর শিশুদের মায়েদের হাতে তা তুলে দেওয়া হবে। তাঁরাই এক সপ্তাহ রান্না করে শিশুদের খাওয়াবেন।
এক সপ্তাহ পর নতুন কর্মী নিয়োগের পর তাঁরা দায়িত্ব বুঝে নেবেন। তাঁর অভিযোগ, শেষপর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর না হওয়ায় গত ১৪ জানুয়ারি থেকে সেন্টারটি বন্ধ রাখা হয়। এরপরও সরকারের বরাদ্দকৃত খাদ্যসামগ্রী নিয়মিত ওই সেন্টারে এসেছে। ফের তা বিক্রি করে দিয়েছে হৈমবতী। নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি তাঁর।
গোটা ঘটনাটি জানিয়ে বৃহস্পতিবার কাকদ্বীপের মহকুমা শাসক সৌভিক চট্টোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন গ্রামের মানুষ। মহকুমা শাসক জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি তাঁর নজরে আসা মাত্রই স্থানীয় ব্লক উন্নয়ন আধিকারিককে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বিডিও ও সিডিপিও ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছেন। অভিযুক্ত দম্পতির বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন মহকুমাশাসক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.