সৈকত মাইতি, তমলুক: ভোটের আগে সাবমার্সিবল পাম্প বসানোকে কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না। এই ঘটনার রেশ ধরেই মঙ্গলবার ভোরে ময়নার বাকচা গ্রামপঞ্চায়েতের মাঝেরপল্লিতে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে গিয়ে আক্রান্ত হয় ময়না থানার পুলিশ। ভাঙচুর চলে পুলিশের ৫টি গাড়িতেও। এদিকে এই ঘটনায় এক বিজেপি নেতা-সহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পঞ্চায়েত ভোটের সময়েও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ময়না। ক্ষমতা দখলের লড়াইকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার উত্তেজনা ছড়ায়। শুরু হয় একের পর এক বোমাবাজি, মারধর। লোকসভা ভোটেও ব্যতিক্রম ঘটল না। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়নার বাকচা মাঝের পল্লি বুথে সাবমার্সিবল পাম্প বসানোকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি দু’পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ছাড়ায়। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি কর্মীদের বাধায় বন্ধ হয়ে যায় ওই সাবমার্সিবল পাম্প বসানোর কাজ। এমন পরিস্থিতিতে সোমবার সকালে বন্ধ হয়ে যাওয়া ওই পাম্পটি ফের খুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে ঠিকাদারের সঙ্গে বচসায় জড়ান স্থানীয়রা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা মিনু মাঝির স্বামী বানেশ্বর মাঝিকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভরতি করা হয়েছে ময়না ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। রাতেই বাকচা এলাকায় অভিযান চালায় ময়না থানার পুলিশ। অভিযান শেষে ফেরার পথে বিজেপি কর্মী, সমর্থকদের পালটা আক্রমণের মুখে পড়েন পুলিশকর্মীরা। জুলুমবাজির অভিযোগ তুলে বাকচা বেসিক স্কুলে পুলিশ ক্যাম্পের সামনেই দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশেরই প্রায় ৫টি গাড়ি নির্বিচারে ভাঙচুর চালানো হয়। সেই সঙ্গে পুলিশকে লক্ষ্য করে শুরু হয় বোমাবাজি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামে বিশাল র্যাফ ও পুলিশ বাহিনী।
এলাকায় সন্ত্রাস ছড়ানো ও মারধরের অভিযোগে বিজেপির ময়না দক্ষিণ মণ্ডলের সহ-সভাপতি অলোক বেরাকে দলীয় প্রার্থীর বাসভবন থেকে এদিন সকালেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় আরও দুই বিজেপি কর্মীকে। ময়না পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুব্রত মালাকার বলেন, “নিজেদের হার সুনিশ্চিত জেনেই এমন হিংসার রাজনীতি বেছে নিয়েছে বিজেপি। সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করতে চলছে বোমাগুলির লড়াই।” বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক নীলাঞ্জন অধিকারীর পালটা দাবি, “দুষ্কৃতী ধরার নাম করে অকারণে পুলিশ রাতের অন্ধকারে অতর্কিতে বাড়িতে ঢুকে নির্বিচারে ভাঙচুর চালিয়েছে। নিরীহ মানুষজনদের মারধর করা হয়েছে। ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন গ্রামবাসীরাই। এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই।”
ছবি: রঞ্জন মাইতি
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.