Advertisement
Advertisement

Breaking News

Malda

পরিচয় অস্বীকার স্বামীর, দেহ শনাক্তকরণে জটিলতা, মালদহে মহিলার মৃত্যুতে আরও রহস্য

মহিলার পরিচয় জানতে ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিল মালদহ জেলা পুলিশ।

Husband denies to accept the body of Malda's woman body। Sangbad Pratidin
Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:October 17, 2023 10:06 am
  • Updated:October 17, 2023 10:06 am  

বাবুল হক, মালদহ: হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা থেকে উদ্ধার হওয়া মহিলার পরিচয় জানতে ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিল মালদহ জেলা পুলিশ। সোমবার বিকেলে পুলিশের সঙ্গে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পৌঁছন এক যুবক। সেখানে সেই মৃত মহিলার দেহ দেখে যুবকের সাফ জানান, এই দেহটি তাঁর স্ত্রীর নয়। যদিও পাঁচদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন তাঁর স্ত্রী। এর পর ঘন্টা খানেক পরেই ওই যুবকের শাশুড়ি মর্গে পৌঁছন। পুলিশের উপস্থিতিতে সেই মৃতদেহটি দেখে যুবকের শাশুড়ি দাবি করেন, “এটাই আমার মেয়ে। পায়ের নখ আর পেটের দাগ দেখে চিনতে পারলাম।” এমন পরিস্থিতিতে কে সত্য বলছেন, যুবক না তাঁর শাশুড়ি? তা নিয়ে ধন্দে পড়ে যান তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা।

এদিন রাত পর্যন্ত দেহটি কার, সেবিষয়ে নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি পুলিশ। দেহটি আদৌ ওই পরিবারের কি না, তা নিয়ে তদন্তকারীরাও বিভ্রান্ত। দেহটি অন্য কোনও পরিবারের হতে পারে, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। অবশেষে এদিন রাতে মালদহ জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মৃতদেহটির পরিচয় জানতে ডিএনএ (DNA) পরীক্ষা করা হবে। সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য দেহ থেকে সংশ্লিষ্ট নমুনা সংগ্রহ করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর চব্বিশ ঘণ্টা কেটে গেলেও অজ্ঞাত পরিচয় মহিলার দেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বাইকের টুল বক্সে লুকিয়ে ২০ লক্ষ টাকার মাদক পাচারের ছক! হাতেনাতে পাকড়াও ৩ পাচারকারী]

সোমবার পুলিশের উদ্যেগে একটি পরিবারের সদস্যদের চাঁচোল থেকে আনা হয়েছিল মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। ওই পরিবারের গৃহবধূ পাঁচদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। মর্গে এসে সেই পরিবারের সদস্যরা কার্যত দুভাগ হয়ে যান। ‘নিখোঁজ’ মহিলার স্বামী দাবি করেন, এই দেহ তাঁর স্ত্রীর হতে পারে না। অথচ মহিলার মা ও এক বোন দাবি করেন, দেহ তাঁদেরই। দুপক্ষর কথাবার্তায় অসঙ্গতি পাওয়া যায় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এমন অবস্থায় মালদহের (Malda) হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা থেকে উদ্ধার হওয়া মহিলার পরিচয় জানতে ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পুলিশ। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের পর মর্গেই সংরক্ষণ করে রাখা হবে। ঘটনার তদন্তকারী অফিসারদের প্রাথমিক সন্দেহ, নিহত মহিলা বিহারের বাসিন্দা নাও হতে পারেন। উত্তর মালদহের চাঁচোল, রতুয়া কিংবা হরিশ্চন্দ্রপুরের বাসিন্দা হতে পারেন ওই মহিলা বলে অনুমান তদন্তকারীদের। নিহত মহিলার পরিচয় জানতে উত্তর মালদহের সংশ্লিষ্ট থানাগুলোর পুলিশকে মাঠে নামানো হয়েছে। থানার আইসিরা এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ওই এলাকা থেকে মহিলা নিখোঁজের সাম্প্রতিক কোনও মিসিং ডায়েরি পুলিশের কাছে নেই বলে খবর। ফলে বিষয়টি আরও কিছুটা জটিল হয়ে দাঁড়ায়।

[আরও পড়ুন: হস্টেল নিয়ে ‘আতঙ্কে’ ভুগছিলেন MA পড়ুয়া, শৌচাগারে মিলল দেহ]

পাশাপাশি হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা লাগোয়া বিহারের (Bihar) থানাগুলোর কাছেও এই বিষয়ে বার্তা পাঠিয়েছে মালদহ জেলা পুলিশ। বিহারের কাটিহার জেলার পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে বিহার পুলিশও মহিলা নিখোঁজ সংক্রান্ত সাম্প্রতিককালের কোনও মিসিং ডায়েরি খুঁজে পাচ্ছে না বলে সূত্রের খবর। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “মহিলা বিহারের নন, উত্তর মালদহের হতে পারেন। খুব শীঘ্রই পরিচয় জানা সম্ভব হবে।” 

উল্লেখ্য, রবিবার সকালে অজ্ঞাত পরিচয় এক মহিলার বিবস্ত্র ও মুখমন্ডল বিকৃত দেহ উদ্ধার ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা এলাকায়। রাস্তার ধারে ধানক্ষেতের মধ্যে দেহটি পড়েছিল। মহিলার মুখে অ্যাসিড জাতীয় কিছু ঢালা ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা অনুমান করলেও প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, সেখান থেকে অ্যাসিডের বোতল পাওয়া যায়নি। অ্যাসিড নয়, মোবিল জাতীয় জ্বালানি তেল দিয়ে পোড়ানো হয়ে থাকতে পারে মহিলার মুখ। মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন কি না, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর স্পষ্ট জানা যাবে। দেহের পাশেই পড়েছিল কন্ডোমের প্যাকেট, ছুরি, গ্লাভস ও ধূপকাঠি। এগুলোর কোনওটিই খুনে ব্যবহার করা হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। শাসরোধ করে খুন, না অন্যভাবে খুন, সেটাও পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। যেখানে দেহটি উদ্ধার হয়েছে সেটি বিহার-বাংলা সীমান্তবর্তী। তাই বিহার থেকে খুন করে দেহ ফেলে যাওয়া হতে পারে বলেও অনুমান করা হচ্ছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement