অর্ণব দাস, বারাকপুর: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের জয়লাভের পর থেকেই বারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বিরোধী শিবির ছেড়ে শাসক শিবিরে যোগদানের লম্বা লাইন পড়েছে। আর খড়দহ উপনির্বাচনের (WB Bypolls) দিন ঘোষণা হতেই দলবদলের এই হিড়িক আরও বাড়ে। ইতিমধ্যেই খড়দহ বিধানসভার অন্তর্গত পঞ্চায়েত এবং পুরসভা এলাকায় হাজারের বেশি বিজেপি এবং সিপিআইএমের কর্মী সমর্থক যোগদান করেছেন শাসক শিবিরে। চলতি সপ্তাহেও শতাধিক পরিবার বিরোধী শিবির ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করবে বলে খবর। দলবদলের এই হিড়িক রীতিমতো বিরোধী দলগুলির প্রার্থীদের প্রচারের মনোবল কেড়ে নিচ্ছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের (WB Assembly Polls) ফল ঘোষণার আগেই করোনায় মৃত্যু হয় খড়দহর জয়ী প্রার্থী কাজল সিনহার। পরবর্তীতে ভবানীপুরের বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেন রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁকেই খড়দহ কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী প্রয়াত কাজল সিনহা জয়লাভ করলেও বিলকান্দা ২ পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ১১০০ ভোটে পিছিয়ে ছিলেন। মূলত, মতুয়া অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় এই এলাকায় তৃণমূল কম ভোট পেয়েছিল বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। চালতি মাসের ৩০ তারিখ খড়দহে উপনির্বাচন, তার আগে গত ৫ অক্টোবর এই এলাকার প্রায় ৫০০ জন কর্মী সমর্থক বিজেপি এবং সিপিআইএম ছেড়ে যোগদান করে তৃণমূলে। এই যোগদানের পর ভোট ময়দানে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ছে বিজেপি।
রবিবার খড়দহের পাতুলিয়া বাজারে তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) একটি নির্বাচনী প্রচার সভায় প্রায় ৩০০ জন কর্মী বিজেপি ও সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। এরপরই বিলকান্দা ২ পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৫০টি পরিবার বিজেপি ছেড়ে যোগদান করে তৃণমূলে। ফের সোমবার খড়দহ বিধানসভার রুইয়া এলাকার ২৪টি পরিবার পদ্মশিবির ছেড়ে যোগদান করে ঘাসফুল শিবিরে। তৃণমূল সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহে ফের শতাধিক বিজেপি (BJP) এবং সিপিএমের নেতাকর্মীর শাসক দলে যোগদানের কথা। জানা গিয়েছে, যোগদান করতে চেয়ে দু’শোর বেশি আবেদনপত্র জমা পড়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বর কাছে। কিন্তু তাঁদের যোগদান এখনও আলোচনা সাপেক্ষ বলে খবর। নির্বাচন ঘোষণার আগেও বিধানসভার রহড়া অরুণাচল এলাকায় প্রায় ১৪০ জন এবং বন্দিপুর এলাকায় ৭০ জনের বেশি বিরোধী শিবিরের কর্মী সমর্থক যোগদান করেছিল তৃণমূলে।
এ বিষয়ে দমদম-বারাকপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, “বাংলার মাটিতে বিজেপির বহিরাগত সংস্কৃতি কেউ মানতে পারছেন না। সেই কারণেই বিজেপি ছেড়ে দলে দলে কর্মীরা তৃণমূলে যোগদান করে মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নে শামিল হতে চাইছেন। খড়দহে একই কারণে বিরোধী দল ছেড়ে বহু মানুষ তৃণমূলে যোগদান করেছেন। যোগদান করে ইতিমধ্যেই তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় ভোট প্রচারেও নেমে পড়েছেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.