সৌরভ মাজি, কালনা: উৎসবে অশান্তি। কালীপুজোয় নরবলি গুজবে কালনায় তুমুল গণ্ডগোল। তান্ত্রিককে উদ্ধারে গিয়ে আক্রান্ত হল পুলিশ। পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কালনা ২ ব্লকের নারকেলডাঙা তেমহানী শ্মশানে তন্ত্রসাধনা করেন সন্ন্যাসী সোরেন। তেমহানী আদিবাসী প্রভাবিত এলাকা। আদিবাসীদের মধ্যে কালীপুজোর চল নেই। তবে এবার প্রথম ওই তান্ত্রিকের উদ্যোগে পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল শ্মশানে। পুজো উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাতে সন্ন্যাসী সোরেনের ভক্তরা জামালপুর, বর্ধমান থেকে শ্মশানে আসতে শুরু করেন। দর্শনার্থীদের সঙ্গে বেশ কয়েকজন শিশু ছিল। অত রাতে বাচ্চাদের কেন শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তা নিয়ে ঝাপানতলা এলাকার বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। সন্দেহ দূর করতে স্থানীয়দের একাংশ পৌঁছে যান শ্মশানে। সেখানে গিয়ে বাসিন্দারা দুটি খাঁড়া দেখতে পান। কেন খাঁড়া রাখা হয়েছে এই প্রশ্ন তুলে তান্ত্রিক এবং তাদের অনুগামীদের ওপর চড়াও হয় এলাকার বাসিন্দারা। তারা অভিযোগ করে, নরবলি দেওয়া হবে। এই নিয়ে হল্লা বেঁধে যায়। অশান্তির খবর পেয়ে গভীর রাতে শ্মশানে যায় কালনা থানার পুলিশ।
[ভাইয়ের পাতে হোটেলের মেনু, নামী রেস্তরাঁ রিজার্ভের চেষ্টায় দিদিরা]
পুলিশ যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযুক্ত তান্ত্রিক-সহ বাচ্চাদের উদ্ধার করে ওই এলাকা থেকে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। এমন সময় গ্রামবাসীরা তান্ত্রিক ও অন্যান্যদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের উপর তারা চড়াও হয়। কয়েকজন পুলিশকর্মী মার খান। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গভীর রাতে শ্মশান লাগায় ক্ষেত্রপালপাড়ার পুলিশ অভিযান চালায়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় ৪৫ জনকে। এলাকার বাসিন্দা বাসুদেব হাঁসদার প্রশ্ন, ”বলি না দেওয়া হলে কেন বাচ্চাগুলিকে আনা হয়েছিল? বাসুদেবের দাবি শ্মশানে অস্ত্র মেলে। তবে পুলিশের যুক্তি নরবলি কিছু নয়। গুজবের বশেই এই কাণ্ড ঘটনা গ্রামবাসীরা। এই পুজোয় বর্ধমান থেকে যোগ দিতে এসেছিলেন আনন্দ হাঁসদা। তাঁর বক্তব্য, ”আমাদের গুরু সন্ন্যাসী। উনি পুজো দেবেন বলে এসেছিলাম। নরবলি দেওয়ার কথা ঠিক নয়।” অভিযুক্ত সন্ন্যাসী সোরেন জানান, ”তাঁর গুরুদেব শ্মশানকালীর পুজো করেন। গুরুদেবের , উদ্দেশ্যে এই পুজো।” পুলিশের উদ্যোগে শ্মশানের কালী রাতেই বিসর্জন দিয়ে দেওয়া হয়।
ছবি: মোহন সাহা
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.