ছবি: মোহন সাহা
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ব্যুরো:গত তিনদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। আর এই দুর্যোগের জেরে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছে বোরো ধান, পাট এবং আম চাষ। কার্যত মাথায় হাত চাষিদের। শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গেই কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
একদিকে করোনার থাবা, আর অন্যদিকে অবিরাম বৃষ্টি (Rain) এবং ঝোড়ো হাওয়াতে মাথায় হাত চাষিদের। এর দোসর হয়েছে শিলাবৃষ্টি। ফলে একদিকে যমন আমের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। তেমনই প্রবল বৃষ্টিতে জলের তলায় চলে গিয়েছে ধান। ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে ক্ষতি হয়েছে পাট গাছেরও। কোন জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত, জানতে হিসেব কষতে বসেছেন ব্লক কৃষি আধিকারিকরা।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় এবার অন্তত ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। এই মূহূর্তে সোনালি রঙ নিয়েছে জমির ধান। লকডাউনের কারণে এবার খুব কম সংখ্যক শ্রমিক এসেছে বাইরে থেকে। ফলে সময়মত শ্রমিক না পাওয়ায় ৪০ শতাংশ ধান জমিতেই রয়ে গিয়েছে বলে জেলা কৃষি দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এদিকে এই ধান কাটার আগেই জেলায় শুরু হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। হাওয়া ও বৃষ্টির কারণে জমিতে জল জমার পাশাপাশি ধান গাছ নুইয়ে পরেছে। জেলা কৃষি আধিকারিক অনির্বাণ লাহিড়ি বলেন, “এই মরশুমে বোরো চাষিদের সংযত ও সতর্ক থাকতে হবে। আবহাওয়া একটু ভাল হলেই দ্রুততার সঙ্গে ধান কেটে তুলে নিতে হবে।”
একই অবস্থা মালদহেও। পাকা ধান, পাট, সবজি নষ্টের পরিমাণ মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ঝড়ে পড়েছে আমও। শিলাবৃষ্টির জেরে আমের ফলন ধাক্কা খেতে পারে। যে ক্ষতির পরিমাণ নেহাত কম নয়। বুধবার ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে যাবেন স্থানীয় বিধায়ক নীহারঞ্ন ঘোষ। ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট সংগ্রহ করতে মাঠে নেমেছে ব্লক আধিকারিকরা।
একই পরিস্থিতি বর্ধমানেও। জেলার কয়েকটি ব্লকে মাঠের বোরো ধান জলের তলায় চলে গিয়েছে। তা পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা। নাদনঘাটের চাষি সামাদ মোল্লার প্রায় ২৫ বিধা জমির ধান মাঠে ছিল। তা জলে ডুবে গিয়েছে। পুরোটাই ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তিনি। পূর্ব বর্ধমানের উপ কৃষি অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, বোরো ধান অধিকাংশ জমি থেকে তুলে ফেলেছেন চাষিরা। এখনও ৫ শতাংশ জমিতে বোরোধান রয়েছে। যা বৃষ্টি হয়েছে তাতে অবশ্যই ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। ব্লক থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে। রাতের মধ্যে চূড়ান্ত রিপোর্ট পাওয়া যাবে। এবার জেলায় প্রায় ২ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোধান চাষ হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.