Advertisement
Advertisement

নোট বদলের ফর্ম নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগ সর্বত্র

বিনিময়ের ফর্ম নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগের ক্ষেত্রে সক্রিয় পুলিশ৷

Huge complains for black marketing of Currency exchange forms everywhrere
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 11, 2016 12:28 pm
  • Updated:November 11, 2016 12:28 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এই প্রথম দুই হাজার টাকার নোট চোখে দেখল আম-আদমি৷ হাতে এল নতুন পাঁচশো টাকার নোটও৷ ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে নোট-বদলে মালিকানা বজায় রাখা গেল বটে, কিন্ত্ত রাজ্যের সব জায়গায় প্রথম দিনের প্রক্রিয়া খুব শান্তিতে শেষ হল না৷ ডাকঘরে আবার টাকাই মেলেনি বহু জায়গায়৷ ব্যাঙ্কের শাখাগুলিতে লিঙ্ক সমস্যা বা ফর্মের বিপত্তি হয়েছে অনেক ক্ষেত্রে৷ হুড়োহুড়ি, ঠেলাঠেলি সামলেও চার হাজারের বদলে সাকুল্যে মিলল কোথাও এক হাজার, কোথাও বা বড়জোর দুই হাজার টাকা৷ সময় বাড়তেই বদলের টাকার পরিমাণ কমেছে৷ সকালের দীর্ঘ লাইন যেখানে, বিকেল গড়াতেই সেখানে ঝুলেছে নোটিস বোর্ড, ‘নো-ক্যাশ৷’ ম্যানেজারকে বাইরে বেরিয়ে মাইকে ঘোষণা করতে দেখা গিয়েছে, শনি-রবিবারও ব্যাঙ্ক খোলা থাকবে৷ আপনারা সহযোগিতা করুন৷

নবান্নের অর্থ দফতর থেকে প্রতি দুই ঘণ্টায় ব্যাঙ্কগুলিতে যোগাযোগ রাখা হয়েছে৷ তেমনই রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের কর্তারাও প্রতিনিয়ত থানাগুলিতে মনিটরিং করে গিয়েছেন৷ ছিল বাড়তি ফোর্স৷ অবস্থা একটু বেগতিক বুঝলেই পুলিশকে দ্রূত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে বলা হয়েছিল৷ সাদা পোশাকেও নজরদারি চালিয়েছে পুলিশ৷ বেলা বাড়তেই বেশ কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ ওঠে, ব্যাঙ্কগুলি ফর্ম না দিয়ে জেরক্সের দোকান থেকে কিনতে বাধ্য করছে৷ বিনিময়ের ফর্ম নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগের ক্ষেত্রেও সক্রিয় ছিল পুলিশ৷ পুলিশ-প্রশাসন পাশে থাকায় কাজ করতে সুবিধা হয়েছে ব্যাঙ্ক বা ডাকঘর কর্মীদেরও৷ তবে নতুন নোট যে সর্বত্র মিলেছে, এমনটিও নয়৷

Advertisement

নতুন নোটের আশায় লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন একটি অংশের মানুষ৷ সেই নোট নিয়েও আবার বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে৷ দোকানদারের কাছে এমনও শুনতে হয়েছে, এই নোট দেখিনি কোনওদিন, চলবে না৷ পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক, হলদিয়ায় নতুন নোট পাওয়া যাবে না শুনেই হালকা হয়েছে ভিড়৷ মালদহের সাদুল্লাপুর শ্মশানে পাঁচশো-হাজারের নোট না চলায় হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে জেলাশাসককে৷ মানিকচকে টাকা তুলতে না পারায় বোনের বিয়ে পিছিয়ে দিয়েছেন ফিরোজ৷

রায়গঞ্জের রবীন চক্রবর্তী টাকার সমস্যায় চেন্নাই যাত্রা পিছিয়ে দিয়েছেন৷ বাংলাদেশের সাতক্ষীরার বাসিন্দা কামরুল জামান আবার বারাসতের এসবিআই শাখায় পাসপোর্ট দিয়ে টাকা না তুলতে পেরে বন্ধ রেখেছেন চিকিৎসার জন্য ভিন রাজ্যে যাত্রা৷ ইসলামপুরের গুঞ্জরিয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে দশ টাকার কয়েন দিয়েও গ্রাহকদের ক্ষোভে তা প্রত্যাহার করে একশো টাকার নোট দেওয়া হয়৷ বালুরঘাটের একটি ব্যাঙ্কে আবার একশো টাকার নোটও শেষ হয়ে যাওয়ায় ৫০, ২০ বা ১০ টাকার নোট দিয়ে পরিস্হিতি মোকাবিলা করা হয়েছে৷ নোটের জোগান কম থাকায় চা বাগানের কর্মীদের মজুরি মেলেনি অনেক ক্ষেত্রে, তেমনই হাটে-বাজারে বিক্রি অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেকটাই কম৷ মেদিনীপুর শহরে হেড পোস্ট অফিসে লাইন দিয়েও টাকা মেলেনি৷ ডাক ঘর কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়, এক কোটি টাকা চেয়েও মেলেনি৷ স্টেট ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিয়ম মেনে টাকা চাওয়া হয়নি৷ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ৷ অনেকে অগত্যা টাকা জমা দিয়েই বাড়ির পথে পা বাড়িয়েছেন৷ বীরভূমের সিউড়িতে বেশ কিছু ব্যাঙ্কের লিঙ্ক সমস্যা দেখা যায়৷ সেখানেও ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছিল৷ ডাক ঘরেও দুপুর পর্যন্ত টাকা মেলেনি৷ পরে অবশ্য অবস্থা স্বাভাবিক হয়৷ শিলিগুড়িতে বাঘাযতীন পার্ক এলাকায় একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে পাঁচশো-হাজারের নোট বদলের ফর্ম না মেলায় উত্তেজনা ছড়ায়৷ বলা হয়, ফটোস্ট্যাটের দোকান থেকে ফোটোকপি করাতে হবে বা কিনতে হবে৷ এতেই উত্তেজনা ছড়ায়৷ উত্তর ২৪ পরগনার কাঁকিনাড়ার রথতলায় দুই হাজার টাকার বেশি তোলা যাবে না, এই নোটিস পরে ছিঁড়ে ফেলে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ৷ শ্যামনগরে ইউবিআই-এ লিঙ্ক চলে যাওয়ায় বাড়ে বিক্ষোভ৷ এমন ছোট-মাঝারি ঘটনা হয়েছে প্রায় সর্বত্র৷

এদিকে, বহু পেট্রোল পাম্পে পুরনো পাঁচশো ও এক হাজার টাকার নোট নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে৷ নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে অ্যাসোসিয়েশন৷ শুক্রবার রাত পর্যন্ত পুরনো টাকা কেন চলবে না, সেই দাবি তুলেছেন সাধারণ মানুষ৷ বেসরকারি হাসপাতাল বা ওষুধের দোকানের ক্ষেত্রেও বৃহস্পতিবার পাঁচশো-হাজারের নোট না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ হয়রানি করা হয়েছে সাধারণ মানুষকে৷ সরকারি হাসপাতালের ক্ষেত্রে এমন অভিযোগের সংখ্যা কম৷ রেলের কাউণ্টারেও পুরনো নোট ভাঙাতে ভিড় করেছিলেন সাধারণ মানুষ৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement