অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: ফারাক্কা ব্যারেজ থেকে ছাড়া জলে প্লাবিত মুর্শিদাবাদের ডোমকলের রানিনগর ও জলঙ্গি থানার বিস্তীর্ণ এলাকা। জলের তলায় বিঘার পর বিঘা চাষের জমি। পুজোর মুখে সর্বস্ব খোয়ালেন কলাই চাষিরা।
মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা, রানিনগর ও জলঙ্গি ব্লকের সীমান্তবর্তী সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। ভগবানগোলার নির্মল চর, রানিনগরের মালিবাড়ি ১, কালীনগর ১, কাতলামারী ১ ও ২, রাজাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত জলঙ্গি ব্লকের সাহেবনগর, সাগরপাড়া, ঘোষপাড়া ও জলঙ্গি ও চোঁয়াপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। যার ফলে হাজার-হাজার বিঘার কলাই ও একানি ফসল জলের তলায় চলে গিয়েছে। যা থেকে আর দাম পাওয়া সম্ভব নয়।
মালীবাড়ি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য বর্ডারপাড়ার শচীন মণ্ডল জানান, “লিজ নিয়ে নির্মল চরে ২২ বিঘা জমিতে কলাই ফসল বুনেছিলাম। যার সবটাই ডুবে গিয়েছে। প্রচুর টাকা ক্ষতি হল।” একই কথা জানান জলঙ্গির চর পরাশপুরের সদস্য আজাদ মণ্ডল, জাবদুল ইসলামরা। তাঁদেরও প্রচুর জমির কলাই ও একানি ফসল ডুবে গিয়েছে। তাঁরা জানান, “প্রচুর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। জল আরও বাড়লে প্রচুর মানুষকে বাড়ি থেকে সরিয়ে নিতে হবে।”
মঙ্গলবার সকালের দিকে সীমান্তবর্তী উত্তর চর মাঝারদিয়াড় এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি দেখেতে বেরিয়েছিলেন রানিনগর ২ ব্লকের বিডিও কৃষ্ণনির্মাল্য ভট্টাচার্য, ওসি বিদ্যুৎ সরকার-সহ অনেকে। বিডিও জানান, “নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ায় মাঠের কলাই ও একানি চাষের ক্ষতি হবে। তবে বন্যাপরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক আছে।” তিনি জানান, “আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রেখে চলেছি। এখনি কোথাও মানুষ জনকে সরিয়ে নেওয়ার পরিস্থিত সৃষ্টি হয়নি।” একই অবস্থা জলঙ্গি ব্লকেরও। এলাকাবাসী বলছে, “এটা স্বাভাবিক বন্যা নয়। রীতিমতো ফারাক্কা ব্যারেজের ছাড়া জল। ব্যারেজের গেট বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত জল বাড়তেই থাকবে। সঙ্গে বাড়বে আতঙ্ক। আর এখন দেখার গেট কতক্ষণ খোলা থাকে।” ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন ব্যারেজে বিপদ সীমার উপরে জল রয়েছে। যে কারণে ব্যারেজ থেকে জল ছাড়তে হচ্ছে।”
জানা গিয়েছে, প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ ৩০ শতাংশ বা ৫০ শতাংশ গেটের জল এক সঙ্গে ছাড়া হয়। প্রয়োজনে ১০০ শতাংশ গেটও খুলে দেওয়া হয়। তবে মনে করা হচ্ছে, মঙ্গলবার ফারাক্কা ব্যারেজের বেশিরভাগ গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। তাই ২৪ ঘন্টার মধ্যে ফারক্কার নিম্ন ধারার অবাহিকা প্লাবিত হয়েছে। নদীর পাড়ের বাসিন্দারা জানান গত ৮-৯ বছরের মধ্যে এত বড় বন্যা হয়নি এই এলাকায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.