সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: বিকৃতকাম মানুষকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে! যুবতী, কিশোরী বা শিশুকে ধর্ষণ তো অহরহ ঘটছেই। এবার মানুষের যৌন লালসার হাত থেকে রেহাই পেল না গরুও। রাতের অন্ধকারে প্রতিবেশীর গোয়াল থেকে গরু চুরি করে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে শ্যামপুর থানার বাড়গ্রাম পূর্বপাড়ায়। বৃহস্পতিবার বাড়গ্রামে নদীর ধারে একজন প্রাণী চিকিৎসক ও ছয়জন প্রাণী স্বাস্থ্যকর্মীর তত্ত্বাবধানে গরুটির ময়নাতদন্ত করা হয়। অভিযুক্ত যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আজ তাকে উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে আদালত তাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
[ গর্ভপাতের জেরে কিশোরী মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য শিলিগুড়িতে ]
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়গ্রামের ছায়া মণ্ডল নামে এক গৃহবধূর একটি সাদা রঙের দু’বছর বয়সের বকনা গরু ছিল। ছায়াদেবী গরুটির নাম দিয়েছিলেন চামেলি। তিনি ওই নাম ধরে ডাকলে যেখানেই থাকুক না কেন ছুটে ছায়াদেবীর কাছে চলে আসত চামেলি। কিন্তু বুধবার সকালে চামেলিকে গোয়াল ঘরে দেখতে না পেয়ে তার নাম ধরে অনেক ডাকাডাকি করা সত্ত্বেও কোনও খোঁজ পাননি। বাধ্য হয়ে তিনি যখন প্রতিবেশীদের কাছে চামেলির খোঁজ নিচ্ছিলেন, তখন কয়েকজন তাঁকে জানান বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে মাঠের মধ্যে একটা সাদা গরু পড়ে রয়েছে। তৎক্ষণাৎ ছায়াদেবী মাঠে গিয়ে দেখেন চামেলি আর বেঁচে নেই। তখনও তার নাক, মুখ থেকে রস গড়াচ্ছে। হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করেন গরুটির যৌনাঙ্গ ও পায়ুতে খেজুর কাঁটার ডাঁটা ঢোকানো রয়েছে। এবং যৌনাঙ্গ ও পায়ু অস্বাভাবিকভাবে ফুলে আছে। সেই অংশ দিয়ে পেটের নাড়িভুঁড়িও কিছুটা বেরিয়ে এসেছে। এই ঘটনা দেখে এলাকাবাসী তাজ্জব হয়ে যান। সকলেরই সন্দেহ গিয়ে গিয়ে পড়ে বছর কুড়ির যুবক সুজল মাইতির উপর।
[ মূষিক বাহিনীর দাপটে কাঁপছে পুলিশ, পালানোর পথ খুঁজছেন উর্দিধারীরা ]
মাস ছয়েক আগে এক রাতে সুজল এই গরুটিকে চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছিল। এছাড়াও এর আগে বেশ কয়েকবার স্ত্রী গরুকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। তাই চামেলির এই পরিণতিতে গ্রামবাসীর সন্দেহ স্বাভাবিক কারণেই তার উপরে গিয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে ধরে নিয়ে আসা হয়। গ্রামবাসীরা তাকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সুজল অবশ্য তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
শ্যামপুরের এই ঘটনা সকলকে তাজ্জব করে দিয়েছে। বিশিষ্ট মনোবিদ অধ্যাপক মৌসুমী মজুমদার এই ঘটনাকে এক ধরনের মানসিক বিকার বলে মনে করেন। তিনি বলেন অভিভাবকদের স্নেহ মায়া-মমতা থেকে বঞ্চিত হলে অনেক ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে এই ধরনের পৈশাচিক প্রবৃত্তি জন্ম নেয়। এই ক্ষেত্রে যে এই জঘন্য ঘটনাটি ঘটিয়েছে সে খুব সচেতনভাবেই বুদ্ধি খাটিয়ে তার যৌন চাহিদা মেটানোর জন্য সহজ মাধ্যম বেছে নিয়েছে। অন্য ক্ষেত্রে আইনি ঝামেলায় জড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই নিরীহ অবলা জীবকে সে তার যৌন খিদে মেটানোর আধার হিসেবে বেছে নিয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.