সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত একমাত্র ছেলের মৃত্যুর পর বউমা ও নাতির সঙ্গে মানসিক দূরত্বের কারণে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিলেন অবসাদগ্রস্ত বৃদ্ধ দম্পতি। এই ঘটনায় পরাগ পালচৌধুরি (৭২) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁর স্ত্রী তাপসী পালচৌধুরিকে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে শ্যামপুর থানার গাদিয়াড়া সরকারি ট্যুরিস্ট লজে।
[হিন্দমোটরে মনুয়াকাণ্ডের ছায়া, প্রেমিকের যোগসাজশে স্বামীকে খুন মহিলার]
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, টালিগঞ্জ থানার ভবানন্দপুরের বাসিন্দা এই দম্পতি গত বুধবার গাদিয়াড়ার রূপনারায়ণ ট্যুরিস্ট লজে এসে ওঠেন। শুক্রবার সকালে তাঁদের ট্যুরিস্ট লজ ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল। সেইমতো তাঁরা শুক্রবার লজের সমস্ত বিল মিটিয়ে দেন। তার পরেও দীর্ঘক্ষণ তাঁরা ঘর থেকে বেরোচ্ছেন না দেখে লজকর্মীদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা ওই দম্পতির ঘরের দরজায় ধাক্কা দিতে থাকেন। তাতেও দরজা খুলছে না দেখে লজ কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েই পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে ভিতর থেকে অচৈতন্য অবস্থায় ওই ওই দম্পতিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা পরাগ বাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাপসীদেবীকে উলুবেড়িয়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়।
[ডাইনি অপবাদে বধূকে চুলের মুঠি ধরে মার, ভয়ে সপরিবারে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয়]
বিভিন্ন সূত্র মারফত পুলিশ জানতে পেরেছে এই দম্পতির একমাত্র ছেলে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে থাকতেন। ২০১৬ সালে ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। তারপর থেকেই এই দম্পতির সঙ্গে তাঁদের বউমা ও নাতির মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়। প্রথমত, একমাত্র ছেলের মৃত্যুকে মন থেকে মেনে নিতে পারেননি এই দম্পতি, তার উপরে বউমা ও নাতির সঙ্গে মানসিক দূরত্ব তৈরি হওয়ায় চরম অবসাদ গ্রাস করে এই বৃদ্ধ দম্পতিকে। সেই অবসাদ থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে না পেয়েই তাঁরা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে পুলিশ মনে করছে। এই দম্পতির অন্যান্য আত্মীয়রা দিল্লিতে থাকেন, তাঁদেরকে খবর দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
[ন’মাস পর নিখোঁজ ছেলেকে ঘরে ফেরাল ফেসবুক]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.