Advertisement
Advertisement
Anubrata Mondal

স্বমহিমায় কামব্যাক করবেন বীরভূমের ‘বাঘ’? নাকি নখদন্তহীন? অনুব্রত ফেরার আগে তুঙ্গে জল্পনা

সম্ভবত আগামী সপ্তাহের মধ্যে অনুব্রত দিল্লি থেকে ফিরবেন। আর তখন জেলার রাজনীতি কী হবে, তা নিয়ে নিজের দলেই চলছে আলোচনা।

How will Anubrata Mondal come back to his political area? this is the main point of discussion in Birbhum
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:September 21, 2024 6:14 pm
  • Updated:September 21, 2024 6:21 pm

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: টাইগার কামব্যাক! তাঁকে ঘিরেই জেলা রাজনীতিতে শোরগোল। বাঘ ফিরলেই বিরোধীরা শেয়ালের মতো গর্তে ঢুকে যাবে, নলহাটির সভায় বলেছিলেন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিম। এখন অনুব্রত মণ্ডলের জামিন মিলেছে। সম্ভবত আগামী সপ্তাহের মধ্যে তিনি দিল্লি থেকে ফিরে আসবেন। আর তখন জেলার রাজনীতি কী হবে, তা নিয়ে নিজের দলেই আলোচনা তুঙ্গে। জামিনের পরে তিনি বোলপুর ফিরবেন নাকি অন্যত্র। তৃণমূল কোর কমিটির নেতাদের ভাবনা, আগে কেষ্টদার শারিরীক পরীক্ষা করা হবে। ১৮ মাস নিদারুণ কষ্টের মধ্যে থেকেছেন। শরীর এমনিতেই খারাপ। কিন্তু মনোবল? যারা তিহাড়ে এবং আসানসোলে নিয়মিত তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যেতেন, তাঁরা জানাচ্ছেন, এতটুকু ঝাঁজ কমেনি। বাঘ বাঘই আছে।

কিন্তু খাঁচা থেকে সবে ছাড়া পাওয়া বাঘ কতটা হিংস্র হবেন? নাকি ‘মুষিক ভব’? তার জন্য তার উপর কিছুদিন নজর রাখতে হবে বলে মনে করছে জেলা রাজনৈতিক মহল। কারণ, তিনি জেলবন্দি অবস্থায় পঞ্চায়েত এবং লোকসভা দুটি নির্বাচন পেরিয়েছে। তাতে জেলা সভাপতি পদে বদল হয়নি বটে কিন্তু ফলাফল আগের থেকে ভালো হয়েছে। অর্থাৎ যখন তিনি নিজে নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজি বানাতেন নিজের হাতে। পট পরিবর্তনে জেলা পরিষদে এখন ক্ষমতাসীন কাজল শেখ। গত দেড় বছরে তাঁরও নিজস্ব বৃত্ত গড়ে উঠেছে। তিনি যে শাসকদলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দের, তাও প্রামাণিত হয়েছে বারে বারে। বিশেষ করে তাঁর ডাকেই তাঁর প্রায় ঘরের উঠোন পাপুড়িয়ে বিশাল জনসভায় সর্বভারতীয় সম্পাদককে হাজির করে বুঝিয়ে দিয়েছেন।

Advertisement
2024 Lok Sabha Election: TMC trails in many wards at Bolpur, place of Anubrata Mondal
চব্বিশে বীরভূমে তৃণমূলের জয় উৎসর্গ করা হয়েছিল জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডলকেই। ফাইল ছবি।

অনুব্রত মণ্ডল না থাকায় কাজল শেখের সাংগঠনিক ধারা মেনে নির্বাচনের আগে থেকে মহিলা, শ্রমিক, ছাত্র যুব, ব্লক ভিত্তিক যে সাংগঠনিক সভা হত, তা গত দুবারের ভোটের সময় হয়নি। তাতে কিন্তু ভোট কমেনি, বরং বেড়েছে। আবার জেলার সব অনুষ্ঠানের সভা-সমাবেশের আর্থিক দায়ভার জেলা সভাপতি হিসাবে অনুব্রত যেভাবে নিতেন, সেটা এবার সকলে মিলে তা করে দিয়েছে। কর্মসূচিও অসফল হয়নি। তাহলে? অনুব্রত ফেরার পরে কী হবে? জেলবন্দি থাকাকালীন জেলার বেশিরভাগ বিধায়ক না আসানসোলে, না তিহাড়ে, তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাননি। শুধু কয়েকবার সাংসদ শতাব্দী রায় গিয়েছেন। দিল্লিতে দলের নির্দেশে সাংসদ অসিত মাল ও দোলা সেন দেখা করে এসেছিলেন।

অনেকে মনে করছেন আতঙ্কিত নেতারা অনেকেই ইডি, সিবিআইকে এড়াতে অনুব্রতর থেকে দূরে থেকেছেন। কিন্তু জেলা কমিটি থেকে একরকম ব্রাত্য, এলাকায় ক্ষমতাহীন হয়ে যাওয়া জেলা পরিষদের প্রাক্তন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কেরিম খান, নানুরের প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরা, প্রাক্তণ খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ প্রদীপ ভকত নিয়মিত জেলে গিয়ে দেখা করেছেন। আর যেতেন নলহাটির বিধায়ক তথা পুরপ্রধান রাজেন্দ্র প্রসাদ সিংহ। অনুব্রত জেলায় ফিরলে কি তাঁদের কথা শুনেই সিদ্ধান্ত নেবেন? জেলা পরিষদে নজরদারি একইসঙ্গে প্রভাব বাড়ানোর জন্য ১০ বছরের অভিজ্ঞ কর্মাধ্যক্ষ হিসাবে কেরিমকে মেন্টরের পদে বসাবেন? নাকি কাজলের রাজনৈতিক গুরু ‘কেষ্টদা’ জেলায় এসে কাজলের সঙ্গে সমঝোতা করেই দল চালাবেন? কাজল যে সমঝোতায় রাজি, তা বোঝাতে কেষ্টদার জামিনের খবরে মিষ্টি বিলি করেছেন তিনি। নাকি কোর কমিটিকে মাথায় রেখে সহমতের ভিত্তিতেই সংগঠন চালাবেন অনুব্রত?

অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ। নিজস্ব ছবি।

সোমবার সম্ভবত অনুব্রতর জেলমুক্তির। আর তার পরে এসব নিয়ে জরুরি বৈঠক বসবে জেলা কোর কমিটি। কারণ, এতদিন অনুব্রত একতরফা জেলে বসে সব শুনেছেন, ভেবেছেন। তিনি জেলে গেলে মেয়েকে দেখভালের দায়িত্ব যাঁদের উপর সঁপেছিলেন, তাঁদের ভূমিকাও দেখেছেন। এখন জেলমুক্তির পরে বীরভূমের দাপুটে নেতার ভূমিকা ঠিক কী হবে, তাপ উপরই নজর জেলা নেতাদের। আগামী ২০২৬ পর্যন্ত কোনও নির্বাচন নেই। ফলে জেলায় ফিরে কি কেষ্ট ফের স্বমহিমায় থাকবেন নাকি নাকি নখ-দন্তহীন ডোরাকাটার ইতিহাস লেখা হবে, সেটাই দেখার।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement