গৃহবধূ নবনীতা দাস।
সৈকত মাইতি, তমলুক: স্বামীর সঙ্গে বউদির বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসার পরেই গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হল। রবিবার ভোরে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে তমলুক শহরের পদুমবসানের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে। মৃত গৃহবধূর নাম নবনীতা দাস। তাঁর বাপের বাড়ি কলকাতার নরেন্দ্রপুরে। মৃতের স্বামীর নাম লক্ষ্মণ দাস। নবনীতার দিদির অভিযোগ, স্বামীর পরকীয়ার খবর নবনীতা জেনে গিয়েছিলেন। তাই তাঁকে খুন করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এদিন দুপুরে তমলুক থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করতে যান গৃহবধূর পরিবারের লোকজন। তবে অভিযোগ নিতে চায়নি তমলুক থানার পুলিশ। এনিয়ে থানার সামনেই বিক্ষোভ চলে। পরে পুলিশ অভিযোগ নিলে মৃতের পরিজনরা শান্ত হন।
জানা গিয়েছে, বছর ১২ আগে তমলুকের লক্ষ্মণ দাসের সঙ্গে নবনীতার বিয়ে হয়। তাঁদের ১১ বছরের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় নবনীতার উপরে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালাত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এই ঘটনা বাপের বাড়ির সদস্যদের অজানা ছিল না। তবুও মেয়েকে মানিয়ে গুছিয়ে নিতে বলেন তাঁরা। এসব মুখ বুজেই মেনে নিয়েছিলেন নবনীতা। তবে সম্প্রতি বউদির সঙ্গে স্বামী লক্ষ্মণের প্রেমের সম্পর্ক ওই গৃহবধূর কাছে ফাঁস হয়ে যায়। এনিয়ে দাম্পত্য কলহে জড়ায় ওই দম্পতি। এই ঘটনার পর থেকেই মনমরা হয়ে গিয়েছিলেন নবনীতা। এদিকে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে শ্বশুরবাড়িতে ফোন করে এই খবরই জানিয়েছিল লক্ষ্মণ দাস। আচমকা মেয়ের মৃত্যুর খবরে প্রায় দিশেহারা নবনীতার পরিবার ভোরবেলাতেই তমলুকে চলে আসে। অসুস্থতাজনিত কারণ নয়, তাঁদের মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। খুন করেছে লক্ষ্মণ ও তার পরিবারের সদস্যরা। এই দাবি তুলে তমলুক থানায় খুনের অভিয়োগ দায়ের করতে যান মৃত গৃহবধূর দিদি। তবে খুনের অভিযোগ নেয়নি তমলুক থানার পুলিশ।
মৃতার দিদির দাবি, স্বামীর সঙ্গে তার বউদির অবৈধ সম্পর্কের খবর পেয়ে প্রতিবাদ করেছিল বোন। তাই তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। তমলুক থানার ওসি স্বপন কুমার চাবড়ি জানান, গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। দেহ উদ্ধার করে তমলুক হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তদন্ত চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.