পলাশ পাত্র, তেহট্ট: সালিশি বসিয়ে নিস্তার নেই। পণের দাবিতে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে খুনের পর ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। অভিযোগ উঠল মৃতের শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে, গৃহবধূর শ্বশুর, শাশুড়ি ও জা’কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে ঘটনার পর থেকেই পলাতক মৃতের স্বামী সাকরাইল। শনিবার মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে তেহট্টের কালীগঞ্জ থানার ছোট চাঁদঘরের বটতলা এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত মহিলার নাম তহমিনা মল্লিক বিবি। ন’মাস আগেই প্রতিবেশী যুবক সাকরাইলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বাড়ির লোকজন জানতে পারার পর তাঁদের বিয়ে দিয়ে দেন। বিয়ের পর কয়েক মাস কাটতে না কাটতেই ভোল বদলে যায় স্বামীর। অভিযোগ, কথায় কথায় বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসতে বলে তহমিনাকে। সেই সঙ্গে চলে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার। শুধু স্বামী সাকরাইল নয়, শ্বশুরবাড়ির প্রত্যেকেই গৃহবধূর উপরে অত্যাচার করত বলে অভিযোগ। সম্প্রতি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তহমিনা। তাতেও অত্যাচার কমেনি। বেশ কয়েকবার অশান্তি রুখতে সালিশিও বসে। কিন্তু কোনওরকম সমাধানেই সায় দেয়নি শ্বশুরবাড়ির তরফ। এরমধ্যেই একদিন অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ১৫ দিন আগে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পঞ্চায়েতের তরফে ফের সালিশির আয়োজন হয়। সেখানে গৃহবধূর শ্বশুর হোসেন জানায়, বউমাকে বাড়িতে নিয়ে যাচ্চে। তবে তাঁর বাপের বাড়ির লোকজন আর যেন শ্বশুরবাড়িতে না আসেন।
[নাবালিকাকে ধর্ষণ, বৃদ্ধকে গণপ্রহারের পর পুলিশের হাতে তুলে দিল জনতা]
শনিবার সকালে প্রতিবেশীদের মারফত মেয়ের মৃত্যুর খবর পান তহমিনার বাবা তামাল মণ্ডল। তাঁর দাবি, আত্মহত্যা নয়, খুন করেই গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে মেয়েকে ঝুলিয়ে দিয়েছে তারা। গরিব মানুষ, দিন আনি দিন খাই। এক লক্ষ টাকা চেয়েছিল মেয়ের শ্বশুর, দিতে পারিনি। তাই মেয়েকে মেরে ফেলল। তিনি ছ’জনের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
এই প্রসঙ্গে জেলার পুলিশ সুপার রুপেশ কুমার জানান, পণের দাবিতে গৃহবধূকে খুনের ঘটনা ঘটেছে। ছ’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়্ছে। ধৃতরা সম্পর্কে মৃতের শ্বশুর হোসেন, শাশুড়ি জাহানারা ও জা কুর্শিয়া মল্লিক। বাকি তিনজনে খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। পলাতকদের মধ্যে রয়েছে মৃতের স্বামী সাকরাইল। ঘটনার তদন্ত নেমেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.