মৃত গৃহবধূ তনয়া মণ্ডল।
নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: ফের পণের বলি গৃহবধূ। পণের দাবিতে গৃহবধূকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। মৃত গৃহবধূর নাম তনয়া মণ্ডল (২৮)। শনিবার দুপুরে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বাগদা থানার দেহালদা গ্রামে। এই ঘটনায় স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই গৃহবধূর বাবা। বাগদা থানার পুলিশ তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত মৃতার শাশুড়ি লক্ষ্মী মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে।এই ঘটনায় দেহালদা গ্রামে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
জানা গিয়েছে, নয় বছর আগে তাপস মণ্ডলের সঙ্গে বাগদার আইশমালি এলাকার বাসিন্দা তনয়া মণ্ডলের বিয়ে হয়। তাপস ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে কর্মরত। ওই দম্পতির বছর ছয়েকের এক পুত্র সন্তানও রয়েছে। মৃতার বাপের বাড়ির তরফের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে তনয়ার উপরে অত্যাচার হত। তাপস ছুটিতে বাড়ি এলে স্ত্রীকে মারধর করত। তাল মিলিয়ে চলত মানসিক অত্যাচার। স্বামী কর্মস্থলে থাকলে শ্বশুর শাশুড়ি তনয়াকে মারধর করত, গঞ্জনা দিত। বেশ কয়েকবার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাপের বাড়িতে চলে আসেন ওই গৃহবধূ। ফের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠানো হয়। এরপর বেশ কয়েকদিন চুপচাপ থাকে শ্বশুর ও শাশুড়ি। তারপর ফের শুরু হয় অত্যাচার।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পুজোতে বাড়ি এসেছে তাপস। শনিবার সকালে আচমকাই স্ত্রীর সঙ্গে বচসা শুরু করে সে। কিছুক্ষণের মধ্যে ছেলের পক্ষ নিয়ে সেই বচসায় যোগ দেয় গৃহবধূর শ্বশুর-শাশুড়ি। দুপুরবেলা কোনওরকম সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশিরা গৃহবধূর শ্বশুরবাড়িতে যান। দেখেন সিলিংফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন ওই গৃহবধূ। সঙ্গেসঙ্গেই বাগদা থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে দেয়। এদিকে মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে যান বাপের বাড়ির সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, আত্মহত্যা নয়, মেয়েকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি। এদিকে মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই মৃতের স্বামী ও শ্বশুর পালিয়ে যায়। বেগতিক বুঝে পালানোর চেষ্টা করেছিল শাশুড়ি লক্ষ্মী মণ্ডল। তবে তদন্তে নেমে শনিবার রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.