দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: গৃহবধূর (Housewife) গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়ে পুড়িয়ে মারার অভিযোগকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য হুগলির মগরার ষষ্ঠীতলা জয়পুরে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ওই গৃহবধূর জবানবন্দি এবং তাঁর আট বছর বয়সি সন্তান ও তাঁর বাপের বাড়ির লোকজনের বয়ানের ভিত্তিতে মগরা থানার পুলিশ গৃহবধূর শাশুড়ি ও স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে।
১১ বছর আগে মগরার (Mogra) সুকান্ত পল্লির নূপুর সাহার সঙ্গে জয়পুরের তাপস সাহার সম্বন্ধ করে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় থেকেই তাপস পুরনো গাড়ি কেনাবেচার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। আট বছরের পুত্র সন্তানও রয়েছে। নূপুরের বাপের বাড়ির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাঁদের বাড়ির মেয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আগে মগরা থানায় একটি গৃহবধূ নির্যাতনের অভিযোগও দায়ের করেছিলেন নূপুর। কিন্তু তাতেও শোধরায়নি স্বামী ও শাশুড়ু। অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে শাশুড়ি নূপুরের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুরো ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিল নাবালক ছেলে তুষান। মাকে চোখের সামনে পুড়তে দেখে রীতিমতো বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে ছোট্ট তুষান তার মামার বাড়িতে ফোন করে ঘটনার কথা জানায়। ফোন পেয়ে মামার বাড়ি থেকে লোকজনেরা ছুটে এসে দেখেন নূপুর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় বিছানায় ছটফট করছে। ওই অবস্থাতেই বাপের বাড়ির লোকজন গৃহবধূর মৃত্যুকালীন জবানবন্দি মোবাইলে রেকর্ড করেন।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় নূপুরকে প্রথমে মগরা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন বুধবার কাকভোরে নূপুরের মৃত্যু হয়। মৃতার ছেলে ঘটনার বিবরণ দিয়ে জানায়, তার মাকে ঠাকুমা কোনও কিছু খাইয়ে দেওয়ার পর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। মগরা থানার পুলিশ গৃহবধূর স্বামী তাপস সাহা ও শাশুড়ি বেলা সাহাকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে ঘটনার পর থেকেই গৃহবধূর শ্বশুর সন্তোষ সাহা বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। এদিকে, এই ঘটনায় এলাকার মানুষ অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.