ছবি: জয়ন্ত দাস।
ধীমান রায়, কাটোয়া: যেন তিনিই ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বপালন করেছেন। মাঝরাস্তার দাড়িয়ে পড়ে চলন্ত যানবাহন আটকে দিচ্ছেন। অধিকাংশ চালকরা তাদের গাড়ি থামাতে বাধ্য হচ্ছেন। আবার কোনও গাড়িচালক যদি পাশ কাটিয়ে তার গাড়ি চালিয়ে পালানোর চেষ্টা করছেন, তো রক্ষে নেই। ওই গাড়ির পিছু পিছু তাড়া করে তাকে ধরেই ছাড়ছে। তারপর সব রাগ গিয়ে পড়ছে গাড়ির উপর। ভাঙচুর করে ছাড়ছে। এই দাদাগিরি কোনও মানুষের নয়, একটি ঘোড়ার। পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা শহরে মালিকবিহীন একটি ঘোড়ার দাপটে অতিষ্ট এলাকাবাসী। রীতিমতো আতঙ্কের মধ্যে কাটাতে হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের। সাদা রঙের ওই ঘোড়াটির কারণে দুর্ঘটনাও ঘটছে। শুক্রবার মধ্যরাতে গুসকরার এক ব্যবসায়ীর গাড়ি অকারণে ভাঙচুর করেছে ওই ঘোড়াটি বলে অভিযোগ।
গুসকরা শহরে স্কুলমোড়ের কাছে একটি সাদা রঙের ঘোড়া ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, প্রায় তিনমাস ধরে গুসকরা শহরের মধ্যে দেখা যায় ঘোড়াটিকে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত গুসকরা রেলস্টেশনের কাছাকাছি ঘুরে বেড়াত। মাসখানেক ধরে গুসকরা স্কুলমোড়ে দেখা যাচ্ছে। গুসকরা স্কুলমোড় বর্ধমান সিউড়ি ২ বি জাতীয় সড়ক ও গুসকরা মানকর রাজ্য সড়কের সংযোগস্থল। এই এলাকায় রয়েছে অনেক দোকানপাট। প্রতিনিয়ত প্রচুর ভিড় লেগে থাকে। আবার গাড়ির চাপও বেশি। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই মালিকবিহীন ঘোড়াটি যখন তখন রাস্তায় এসে গাড়ি আটকে দিচ্ছে। তাড়ালেও সরতে চাইছে না। গাড়ি না থামালে তাড়া করছে। আবার অনেক সময় আচমকা বাইকের সামনে চলে আসায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। ফলে স্থানীয়রা কার্যত আতঙ্কে রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে গুসকরায় ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় সুপ্রভাত গাইন নামে এক ব্যবসায়ীর বাড়ির সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা চারচাকা গাড়িটির কাঁচ ভেঙেছে করেছে ওই ঘোড়াটি। সুপ্রভাতবাবু বলেন,”প্রতিদিনের মতোই আমার বাড়ির সামনে গাড়িটি দাড় করানো ছিল। হঠাৎ রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ একজন আমায় ফোন করে জানান যে, একটি ঘোড়া আমার গাড়িতে ভাঙচুর শুরু করেছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে যাই। কিন্তু ঘোড়াটিকে তাড়ানোর চেষ্টা করলেও যায়নি। পুলিশকে জানাই। পুলিশ আসে। পুলিশ প্রশাসনের উচিৎ ওই ঘোড়াটি নিয়ে কিছু বিহিত করা। না হলে অনেক মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যাবে।”
গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখোপাধ্যায় বলেন,”সমস্যার কথা জানি। বনদপ্তরের সঙ্গে কথা হয়েছিল। কিন্তু ঘোড়া যেহেতু গৃহপালিত পশু তাই বনবিভাগ দায়িত্ব নিতে চাইছে না। বিকল্প কিছু করা যায় কিনা ভাবছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.