দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: হনুমানের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে রীতিমতো সাড়া পড়ল হুগলির রামনগরের রথতলায়৷ এই উপলক্ষে ভান্ডারারও আয়োজন করা হয়। যার জন্য এই আয়োজন সেই স্বর্গত হনুমানটি রামনগর রথতলা এলাকার মানুষের অত্যন্ত কাছের ছিল। এলাকার মানুষ তাকে খুব ভালবাসত।
গ্রামবাসীদের ঘরে ওই হনুমানটি ঢুকলে তাদের কাছে তা মঙ্গলের প্রতীক বলে মনে করত। হনুমানটি কারওর কোনও ক্ষতি করত না, কোনওরকম অত্যাচার করত না। গ্রামের মানুষ তাকে রীতিমতো ঘরের মধ্যে বসিয়ে আদর করে খাওয়াত। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে হনুমানটি এই গ্রামে থাকতে থাকতে তাদেরই পরিবারের একজন হয়ে গিয়েছিল। মাঝখানে একবার গ্রামে অন্য একটি হনুমানের দল আসার পর হনুমানটি ওই দলের সঙ্গে চলে যায়। সে সময় গ্রামের মানুষের মন ভীষণ খারাপও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন পর গ্রামের মানুষের টানে হনুমানটি ফিরে পেয়ে খুশি হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। মাসকয়েক আগে হনুমানটি অসুস্থ হয়ে পড়লে গ্রামবাসীরা বনদপ্তরকে খবর দেন গ্রামবাসীরা৷ হনুমানটির চিকিৎসারও ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু শত চেষ্টাতেও সকলের মায়া কাটিয়ে শনিবার হনুমানটি মারা যায়।
গ্রামের মানুষ আলোচনা করে শাস্ত্রমতে হনুমানটির শ্রাদ্ধ করা হবে। সেই মতো মঙ্গলবার ৮ জন ব্রাক্ষণ এনে রীতিমতো মন্ত্রপাঠ করে স্বর্গত হনুমানটির শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়। গ্রামেরই বাসিন্দা রাম কুণ্ডু ও লক্ষ্মীকান্ত মালিক জানান, এলাকারই রামকৃষ্ণ আশ্রম সংলগ্ন এলাকায় এই উপলক্ষে এক ভান্ডারার আয়োজন করা হয়। আশেপাশের গ্রামের লোকজন মিলিয়ে অন্তত দু’হাজার মানুষ এই ভান্ডারায় যোগ দেয়। ভান্ডারায় আসা অতিথিদের জন্য লুচি, আলু পটলের তরকারি, ছোলার ডাল, চাটনি ও মতিচুরের অঢেল আয়োজন করা হয়। গ্রামের মানুষই জানান তারা তাদের প্রিয় হনুমানটির আত্মার শান্তির জন্য নিজেরাই চাঁদা তুলে এই শ্রাদ্ধের আয়োজন করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.