সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বিদ্যুতের খুঁটির পাশে পড়ে বইয়ের ব্যাগ। রেললাইনের ধারে দাঁড় করানো দুটি সাইকেল। আর রেললাইন জুড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে কিশোর-কিশোরীর দেহ। বুধবার সকালে বর্ধমান-হাওড়া কর্ডলাইনের পাল্লারোড ও চাঁচাই স্টেশনের মাঝামাঝি লালপুল এলাকায় ছিন্নভিন্ন দেহ দুটি পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে হুগলির কামারকুণ্ডু জিআরপি দেহ দু’টি উদ্ধার করে। ঘটনার কিছু আগেই ওই রেললাইন দিয়ে গিয়েছিল আপ পূর্বা এক্সপ্রেস। জিআরপির প্রাথমিক অনুমান, পূর্বা এক্সপ্রেসের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে ওই যুগলের।
প্রাথমিক তদন্তে রেলপুলিশ জানতে পেরেছে ওই কিশোর-কিশোরীর সম্পর্ক ছিল। যা মানতে অস্বীকার করে পরিবারের লোকজন। এই নিয়ে টানাপোড়েন। তার জেরেই ওই কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছে রেল পুলিশ। তবে ঘটনার পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যেভাবে বইয়ের ব্যাগ ও সাইকেল রেললাইনের ধারে রাখা ছিল তাতে পুলিশের অনুমান, আত্মঘাতীই হয়েছে ওই কিশোর-কিশোরী।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই কিশোরের নাম অর্ঘ্য মণ্ডল। বয়স ১৭ বছর। বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার রসুলপুরে। স্থানীয় স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। মৃত কিশোরীর নাম দোলা সাঁতরা। বাড়ি মেমারির মহেশডাঙা ক্যাম্পে। বৈদ্যডাঙা গার্লস হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে। স্থানীয়দের মাধ্যমে রেলপুলিশ জানতে পেরেছে, অর্ঘ্যর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল দোলার। যা মেনে নিতে পারেনি দোলার পরিবার। অর্ঘ্যর সঙ্গে সে যাতে সম্পর্ক না রাখে তার জন্য চাপ সৃষ্টিও করা হচ্ছিল পরিবারের তরফে। সেকারণেই ওই কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল বলে মনে করছে রেলপুলিশ।
গতকাল সকালে টিউশনি পড়তে যাচ্ছে বলে দু’জনেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। তারপর দু’জনেই রেললাইনের ধারের ওই এলাকায় সাইকেল নিয়ে যায়। আপ পূর্বা এক্সপ্রেস পার হয়ে যাওয়ার পর তাদের ছিন্নভিন্ন দেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। মুখের অংশ এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল যে স্থানীয়রা প্রথমে চিনতেই পারেননি। রেলপুলিশ খবর পেয়ে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। স্কুলব্যাগ ও সাইকেলও উদ্ধার করেছে তারা। পরে পুলিশ দু’জনের পরিচয় পায়। ঘটনায় গোটা এলাকায় শোকের আবহ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.