দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: খোদ সরকারি হাসপাতালের মর্গ থেকে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, মর্গে পড়ে থাকা মৃতদেহের স্তূপ থেকে দূষণ ছড়াচ্ছে এলাকায়। এর জেরে গত প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে স্থানীয়দের জীবনযাত্রা দূর্বিষহ হয়ে পড়েছে। ডাক্তারবাবুরা মর্গে ময়নাতদন্তের কাজে যেতেও আতঙ্কিত বোধ করছেন। মৃতদেহের স্তূপ থেকে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কায় প্রহর গুনছেন বাসিন্দারা। চরম অস্বাস্থ্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালের মর্গে।
জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিক কালে হুগলিতে অস্বাভাবিক মৃত্যুর হার বেড়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৃতদেহের পরিচয় অজ্ঞাত থেকে যাচ্ছে। ফলে পরিবারের লোকজনের সন্ধান না মেলায় হাসপাতালের মর্গেই মৃতদেহের স্থান হচ্ছে। এদিকে দিনের পর দিন বেওয়ারিশ মৃতদেহ মর্গে পড়ে থাকায় পচে গিয়ে তা থেকে দূষণ ছড়াতে শুরু করেছে। তাছাড়া চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে কোনও ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা না থাকায় ওই মহকুমার বিভিন্ন অঞ্চলের মৃতদেহগুলিও এখানকার মর্গে আসছে। এদিকে একের পর এক মৃতদেহের ভিড়ে চুঁচুড়া সদর হাসপাতালের মর্গের অবস্থা তথৈবচ। ধারণ ক্ষমতার অনেক বেশি মৃতদেহ জমে থাকায় সম্প্রতি মর্গ থেকে দুর্গন্ধ বেরতে শুরু করেছে। এর জেরে লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। মর্গের দূরাবস্থার ছবিটা অত্যন্ত করুণ। মর্গের দরজার নিচে দিয়ে বেরিয়ে আসছে রক্তের ধারা। এই ঘটনায় বেশি বিপাকে চুঁচুড়া পুরসভার সাফাই কর্মীরা। মর্গের ঢিল ছোঁড়া দূরত্বেই সাফাইকর্মীদের আবাসন। শহরকে দূষণমুক্ত রাখলেও তাঁদের বাসভবনই এখন দুর্গন্ধের কবলে। অভিযোগ, বেলা বাড়লে দুর্গন্ধের দাপটে দরজা জানলা খোলা যায় না। ছেলেমেয়েরা অসুস্থ হয়ে পড়ায় দুশ্চিন্তা বাড়ছে। প্রশাসন যদি খুব শিগগির দেহগুলি সরিয়ে না নেয়, তাহলে সাফাইকর্মীরা পরিবার-সহ অসুস্থ হয়ে পড়বেন।
সাফাইকর্মীদের আবেদন, যত তাডাতাড়ি সম্ভব মর্গে থাকা অতিরিক্ত দেহগুলি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক। নাহলে আগামী দিনে শহরে রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়বে। এদিকে বেওয়ারিশ দেহগুলির সদগতি নিয়ে দোটানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বাসিন্দাদের অভিযোগ পেয়েও তাই হাসপাতালের তরফে কোনও বার্তা দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, বাড়ি লাগোয়া এলাকায় দুর্গন্ধের জেরে বাসিন্দাদের ক্ষোভ বাড়ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.