দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকার অপরাধে অসুস্থ ছাত্রকে ৩৩০ বার ওঠবস করালেন মাদ্রাসার অঙ্কের শিক্ষক। ঘটনার জেরে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে ১৩ বছরের বালক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। বিপদ এখনও কাটেনি বলেই জানা গিয়েছে। ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হুগলির ঘোষপুর এলাকায়।
জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগেই হার্নিয়া অপারেশন হয়েছিল ওই ছাত্রটির। ফলে, অতিরিক্ত ওঠবসের কারণে অপারেশনের ক্ষত জায়গায় গুরুতর আঘাত লাগে তার। তারপর সংকটজনক অবস্থায় একটি স্থানীয় নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয় তাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আবার ওই ছাত্রের অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। ছেলের এই পরিণতির জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ বা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এখনও পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি ওই অসুস্থ ছাত্রের পরিবার। বর্তমানে আইসিইউ-তে জীবন-মরণের লড়াই চালাচ্ছে ছাত্রটি।
[খাস শিলিগুড়িতে দাপাল হাতি ও চিতাবাঘ, ঘুম ছুটল শহরবাসীর]
অসুস্থ ছাত্রটির নাম আকিব মল্লিক। ঘোষপুর জুনিয়র হাই মাদ্রাসার পড়ে সে। মাঝে সাত দিনের জন্য মামার বাড়ি গিয়েছিল ছুটি কাটাতে। ফিরে বৃহস্পতিবার স্কুলে আসে। তখনই অভিযুক্ত শিক্ষকের রোষের মুখে পড়তে হয় ওই ছাত্রকে। প্রথমে স্কুলে না আসার কারণ জানতে চান ওই শিক্ষক। ছাত্র যথাযথ কোনও উত্তর দিতে না পারলে, তিনি শাস্তি স্বরূপ ৩৩০ বার ওঠবস করতে বলেন ওই ছাত্রকে। অভিযোগ, তখন ছাত্র নিজের হার্নিয়া অপারেশনের কথা স্যারকে জানালে তিনি ছাত্রকে বলেন, ওঠবস না করলে তিনি ২০টি ঘুষি মারবেন। তখন ভয়ে ছাত্রটি ওঠবস করে, কিন্তু পরে বাড়ি ফিরে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। আবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। তখনই জানা যায় ৩৩০ বার ওঠবসের জেরে সেলাইয়ের জায়গা থেকে শরীরের ভিতরে প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে ছেলেটির। যার জেরে শুক্রবার আবার অস্ত্রোপচার করা হয়।
ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষকের সাফাই, তিনি ভেবেছিলেন ছাত্র শাস্তি এড়িয়ে যাওয়ার ভয়ে এসব বলছে। তাই এমন ঘটনা ঘটে গিয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে স্কুলের প্রিন্সিপাল হোসেন আলি মল্লিক জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই তিনি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।
[শ্লীলতাহানির অভিযোগে উত্তাল বনগাঁ, স্কুলেই শিক্ষককে বেদম মার]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.