দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: ফের তুচ্ছ কারণে আত্মহত্যা নাবালিকা স্কুলছাত্রীর। চাঞ্চল্য হুগলির চাঁপদানির এমবি রোডে। বুধবার রাতে টিভি দেখাকে কেন্দ্র করে তিন বোনের মধ্যে ঝগড়া চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। আর তার জেরেই ১০ বছরের অঞ্জলী কুমারী সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অনুমান স্থানীয়দের। অঞ্জলি চাঁপদানির একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। যেসময় ঘটনাটি ঘটেছে সেসময় নাবালিকার বাবা-মা কেউ বাড়িতে ছিলেন না। তাঁরা গিয়েছিলেন বিহারে আত্মীয়ের বাড়িতে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, অঞ্জলির বাবা মনোজ রায় ও মা মমতা দেবী বিহারে এক আত্মীয়ের বিয়ের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছেন। যাওয়ার আগে প্রতিবেশীদের অনুরোধ করেন, মেয়েদের দিকে নজর রাখতে। কিন্তু প্রতিবেশীরা বিষয়টিকে সমর্থন করেননি। তারা মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে বিয়েবাড়ি যেতে বলেছিলেন মনোজ এবং মমতাকে। কিন্তু কথা কানে নেননি বাবা-মা। মেয়েদের রেখেই আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটায় বড় বোন তনুজা (১৩), মেজ বোন অঞ্জলি (১০) ও ছোট বোন নীতা (৮) ঘরে একসঙ্গে বসে টিভি দেখছিল। কিন্তু টিভিতে যে কার্টুনটি চলছিল তা পছন্দ ছিল না অঞ্জলির, সে অন্য কার্টুন দেখতে চাই। তাতে রাজি হয়নি তনুজা এবং নীতা। এতেই বচসা শুরু হয় দুই বোনের মধ্যে।
ছোট বোন নীতা জানায়, টিভি দেখা নিয়ে তাদের সাথে অঞ্জলির ঝগড়া হয়। এরপরই অঞ্জলি তনুজা ও নীতাকে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলে। অঞ্জলি একা টিভি দেখবে বলে তাদেরকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। তনুজা ও নীতা ঘরের বাইরে চলে আসে। কিন্তু অনেকক্ষণ অঞ্জলি দরজা না খোলায় তারা জানালা দিয়ে দেখে অঞ্জলি সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে। পাশেই রয়েছে উঁচু টেবিল। এরপরই দুই বোন প্রতিবেশীদের ঘটনার কথা জানায়। তারা ভদ্রেশ্বর থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
পুলিশের অনুমান উঁচু টেবিলের উপর দাঁড়িয়েই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে অঞ্জলি। মৃতার বাবা-মাকে বিহারে খবর দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় প্রতিবেশীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কিন্তু অঞ্জলীর বাবা-মার অবিবেচকের মতো কাজে রীতিমতো ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.