Advertisement
Advertisement

জলমগ্ন খানাকুলে নাতিকে বাঁচাতে গিয়ে ভেসে গেলেন দাদু

সব মিলিয়ে বন্যায় এ পর্যন্ত হুগলিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ছয়।

Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 29, 2017 10:33 am
  • Updated:July 29, 2017 10:33 am  

সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: নাতিকে বাঁচাতে গিয়ে জলের স্রোতে তলিয়ে গেলেন দাদু। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে খানাকুলের বাইনানে। মৃতের নাম আনসার খাঁ (৬০)। বাড়ির সামনেই শুক্রবার দুপুরে খেলছিল বছর দশেকের নাতি। কিন্তু আচমকাই গ্রামে ঢুকতে থাকে দ্বারকেশ্বর নদীর জল। জলের স্রোত থেকে বাঁচাতে নাতিকে এক ব্যক্তির কোলে তুলে ওই ব্যক্তি নিজের ঘর থেকে শেষ সম্বল একটি পুঁটুলি নিয়ে বের হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারলেন না। জলে ভেসে গেলেন তিনি। রাতে উদ্ধার হল তাঁর দেহ।

বৃষ্টি কমলেও রাজ্যের একাধিক নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। ফলে এখনও প্লাবিত হাওড়া, হুগলি, বীরভুম, বাঁকুড়া, বর্ধমানের একাধিক এলাকা। জলের গ্রাসে কোথাও ভেসে যাচ্ছে ঘড়-বাড়ি, কোথাও বা গরু-ছাগল। জলের স্রোতে তলিয়ে যাচ্ছে মানুষও। পিটিআই সূত্রে জানানো হয়েছে, বন্যায় রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮। রাজ্যে বন্য পরিস্থিতির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ২২ লক্ষ ছাড়িয়েছে। ২০৭ টি ত্রাণ শিবিরে ৪৫ হাজার মানুষ আছেন। হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া ও বর্ধমানের ১৩টি ব্লক ভয়ংকর ক্ষতিগ্রস্ত। ঘাটালে আটকে বহু মানুষ। তাঁদের উদ্ধারে কপ্টার পাঠানো হলেও শুক্রবার কেউ তাতে ওঠেননি।

Advertisement

[প্রকাশ্যে যুবককে কুপিয়ে খুন, পালাতে গিয়ে ধৃত অভিযুক্ত]

আজ ফের এনডিআরএফের একটি দল সেখানে গিয়ে আটকে থাকা মানুষদের উদ্ধার করার কাজ শুরু করেছে। মুণ্ডেশ্বরীর বাঁধ ভেঙে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর এবং আমতায় নতুন করে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের ন’টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত। সেগুলির সঙ্গে বর্ধমানের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। এদিকে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ায় জল নামছে না বাঁকুড়া এবং পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায়। পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হচ্ছে। যদিও পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। সেখানকার মানুষকে উদ্ধারে পাঠানো হচ্ছে উদ্ধারকারী দল। শুক্রবারই খানাকুলের ছত্রশালে মুণ্ডেশ্বরী নদীতে জলস্রোতের ধাক্কায় একটি যাত্রীবোঝাই নৌকো উল্টে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। মৃতের নাম কাজল বেরা (৪৬)। অধিকাংশ যাত্রীই সাঁতরে পাড়ে উঠে আসেন। তবে নিখোঁজ হয়ে যান প্রায় ২০ জন। আরামবাগের আরাণ্ডি ২ পঞ্চায়েতের হিয়াতপুরের একটি নদী থেকে মির রহমান (৫০) নামে এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়।

সব মিলিয়ে বন্যায় এ পর্যন্ত হুগলিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ছয়। খানাকুলের ঘোলদিগরুইতে মুণ্ডেশ্বরীর বাঁধ ভেঙে পান্থহরি, ন্যাওটা, ঘোলদিগরুই, বালিপুর, কোটালপুর-সহ ১০ থেকে ১২টি গ্রাম জলের তলায় চলে যায়। খানাকুলের বলাইচকে মুণ্ডেশ্বরীর একটি শাখা খাল ভেঙে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। পুরশুড়ার মির্জাপুরে দামোদরের বাঁধ ভেঙে মীর্জাপুর, আলাটি, রসুলপুর সহ অনেকগুলি গ্রাম প্লাবিত হয়। দামোদরের জল পুরশুড়াকে ভাসিয়ে মুণ্ডেশ্বরীতে পড়ায় আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেছে বন্যা পরিস্থিতি। আরামবাগের হরিণখোলা ১ ও ২ এবং মলয়পুর ১ ও ২ অঞ্চল ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠেছে। একইরকম পরিস্থিতি হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর এবং আমতাতেও। জলে থইথই বিস্তীর্ণ এলাকা। রাজ্য সরকারের তরফে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণ। চালানো হচ্ছে উদ্ধারকাজও।

[১৯৭৮-এর বন্যার স্মৃতি ফিরল, উদ্বেগ মুখ্যমন্ত্রীর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement