দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: শিবরাত্রি উপলক্ষে তারকেশ্বরে পুজো দিতে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল অন্তত তিনজনের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি একজন। শুক্রবার সকালে হুগলির তারকেশ্বরের বাগবাড়ি থেকে বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোড ধরে স্কুটি চালিয়ে মন্দিরে যাচ্ছিলেন চারজন। সেসময় উলটোদিক থেকে আসা লরির ধাক্কায় দুর্ঘটনা ঘটে। ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁর শারীরিক অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় তাঁকে তড়িঘড়ি ভরতি করিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা। পরে তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, একটি স্কুটিতে তিন যুবক সওয়ার হয়ে বৈদ্যবাটি থেকে তারকেশ্বর যাচ্ছিলেন। কারও মাথায় হেলমেট ছিল না বলে জানাচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। মাঝে বাগবাড়ির কাছে স্কুটি থামিয়ে একটি পেট্রল পাম্পের কাছে একটি দোকানে চা খান তাঁরা। এই সময়ে পরিচিত এক বন্ধুর সঙ্গে তিনজনের দেখা হয়। এঁরা সেই বন্ধুটিকেও তারকেশ্বর যাওয়ার জন্য স্কুটিতে তুলে নেন। মোট চারজন মিলে হেলমেটহীন অবস্থায় স্কুটি নিয়ে তারকেশ্বর মন্দিরের উদ্দেশে রওনা হন। একটু এগোতেই উলটোদিক থেকে আসা একটি লরির সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারায় স্কুটি। লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনজন প্রাণ হারান। চতুর্থজনকে উদ্ধার করে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি করানো হয়। সেখান থেকে তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে চিকিৎসকদের পরামর্শে।
নিহত তিনজনের নাম রাজ দাস, রাজেশ দাস, আকাশ দাস। এঁদের সকলের বয়স ২১ বছর। জখম ছোটু দাসের বয়স মাত্র ১৬ বছর। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এঁরা সকলে কলকাতার নারকেলডাঙা এলাকার বাসিন্দা। স্কুটি সওয়ারিদের মাথায় হেলমেট না থাকায় অর্থাৎ ট্রাফিক আইন তাঁরা মেনে না চলায় দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মত স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের। আরেকাংশ আবার বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোডের ট্রাফিক ব্যবস্থাকেও দায়ী করছেন। তাঁদের মতে, শ্রাবণ মাস কিংবা এই শিবরাত্রির সময়ে তারকেশ্বরের মন্দিরে প্রচুর ভিড় হয়। জনসমাগমের চাপে দুর্ঘটনা এড়াতে এই রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কিন্তু এবছর তা হয়নি। নিয়ম না মেনেই বহু গাড়ি ঢুকে পড়েছে এই রাস্তায়। তার জেরেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। সম্প্রতি পোলবায় পুলকার দুর্ঘটনার জেরে ২ স্কুল পডুয়া এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তারপরও ওই এলাকায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ কিংবা ট্রাফিক আইনে কড়াকড়ির কোনও তৎপরতা নেই পুলিশের মধ্যে, এই অভিযোগে সরব সকলে। আজকের দুর্ঘটনার পর অভিযোগের সুর আরও চড়ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.