ধীমান রায়, কাটোয়া: মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কিন্তু এখনও পূর্ব বর্ধমানের একাধিক এলাকায় রমরমিয়ে চলছে বেআইনি চোলাই মদের কারবার৷ প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে এই কারবার চালাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা৷ পুলিশ ও আবগারি দপ্তরের অভিযানের ভয়ে প্রয়োজনে তারা পালটে নিচ্ছে কারবারের ঠিকানা৷ খুঁজে নিচ্ছে আরও নিরিবিলি স্থান। কিন্তু ব্যবসা চলছে আগের মতোই৷ আপন গতিতে৷
[প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আদিবাসী গৃহবধূকে ‘গণধর্ষণ’, গ্রেপ্তার ৪]
শান্তিপুর বিষমদ কাণ্ডের পর, শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের কালনার প্রশাসনিক সভা থেকে বেআইনি চোলাই বন্ধে প্রশাসনকে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য পুলিশের শীর্ষ আধিকারিক ও আবগারি দপ্তরের কর্মীদের কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি৷ বলেছিলেন এই ব্যবসা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের৷ কিন্তু এরপরেও পালটায়নি জেলার চিত্রটা৷ পুলিশ ও আবগারি দপ্তরের চোখে ফাঁকি দিয়ে আউশগ্রামের অজয় নদের চরে চলছে দেদার চোলাই উৎপাদন। আর লিটার লিটার সেই চোলাই মদ পাচার হয়ে যাচ্ছে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট, ভাতার এলাকার বিভিন্ন গ্রামে। মদ পাচার হচ্ছে বীরভূম জেলাতেও। বীরভূম ও বর্ধমান জেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে অজয় নদ। যার এক প্রান্তে রয়েছে বর্ধমান জেলা ও অন্য প্রান্তে রয়েছে বীরভূম জেলা। জানা গিয়েছে, অজয় নদের উপর এই দুই জেলার সীমান্তে রয়েছে অবন সেতু। বোলপুরের দিক থেকে অবন সেতুতে ওঠার আগেই বাঁদিক দিয়ে চলে গিয়েছে একটি কাঁচা রাস্তা৷ সূত্রের খবর, এই রাস্তা ধরে প্রায় ৪ কিলোমিটার এগোলেই চোখে পড়বে চোলাই কারবারিদের সাম্রাজ্য। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, অজয়ের চরে ইতস্তত ভাবে বিছিয়ে রয়েছে হোগলার গাছের জঙ্গল। এই সমস্ত হোগলার জঙ্গলের মধ্যেই প্রত্যেকদিন উৎপন্ন হচ্ছে হাজার হাজার লিটার চোলাই মদ৷ প্রায় ৩০-৩৫ জন চোলাই কারবারি সেখানে কাজ করে চলেছে সেখানে৷
[দীর্ঘদিন ডিউটিতে অনুপস্থিত, বিচারকের নির্দেশে শ্রীঘরে সিআরপিএফ জওয়ান]
প্রসঙ্গত, পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের কুনুর নদীর পাড়ে অবস্থিত বসতপুর গ্রাম চোলাই কারবারের জন্য কুখ্যাত ছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, গত এক-দেড় মাস ধরে বসতপুর গ্রামে বারংবার হানা দিয়ে সেই সমস্ত চোলাইয়ের ঠেক নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে পুলিশ৷ গত একমাসে বসতপুর গ্রাম থেকে ১৭ জন চোলাই কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে ভাতার থানার পুলিশ। আবগারি বিভাগের গুসকরা রেঞ্জের আধিকারিক অলোক কুমার মুদি দাবি করেছেন, শান্তিপুরের ঘটনার পর থেকেই চোলাই ঠেক ভাঙতে লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে প্রশাসন। জানা গিয়েছে, পুলিশি ধড়পাকড়ের ভয়ে বসতপুরের কয়েকজন চোলাই কারবারি বর্তমানে আউশগ্রামে অজয় নদের ধারে আস্তানা গেড়েছেন এবং তারাই সেখানে ব্যবসা চালাচ্ছে৷ যেখান থেকে চোলাই পৌঁছে যাচ্ছে আউশগ্রামের কাছাকাছি তিনটি ইট ভাটাতে৷ অথবা সেখানকার শ্রমিকদের মদ খেতে আসেন ওই ঠেকে।
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.