ধীমান রায়, কাটোয়া: প্রশাসনের নজর এড়িয়ে রমরমিয়ে চলত চোলাই মদের কারবার। কিন্তু, শান্তিপুর বিষমদ কাণ্ডের পর যৌথ অভিযানে নামে পুলিশ ও আবগারি দপ্তর। ফলও মিলল হাতেনাতে। চাপে পড়ে এখন আত্মসমর্পণ করতে চাইছে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের বসতপুর গ্রামের চোলাই মদের কারবারীরা! পুলিশের কাছে রীতিমতো মুচলেকা দিয়ে ব্যবসা ছাড়তেও রাজি তারা। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের মধ্যস্থতায় পুলিশ সুপারের কাছে গণ আত্মসমপর্ণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চোলাই মদের কারবারীরা।
[ চিকিৎসার নামে কাউকে টাকা দেবেন না, কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর]
সম্প্রতি নদিয়ার শান্তিপুরে বিষমদ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনায় শোরগোল পড়েছিল গোটা রাজ্যে। মৃতদের পরিবার পিছু দুই লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দিয়েছে সরকার। কিন্তু, ঘটনা হল, শুধু শান্তিপুরেই নয়, পূর্ব বর্ধমানে অজয় নদের তীরে বিভিন্ন গ্রামেও দীর্ঘদিন ধরেই চোলাই মদের কারবার চলছে রমরমিয়ে। ‘সংবাদ প্রতিদিন ডট ইন’-এ সে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। আউশগ্রামের দিগনগর, গোপীনাথপুর, ভাতারের বড়বেলুন, বসতপুর-সহ বিভিন্ন গ্রামে একযোগে অভিযানে নামে পুলিশ ও আবগারি দপ্তরের আধিকারিকরা। ভেঙে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি চোলাই মদের ঠেক। আর তাতেই প্রমাদ গুনছে পূর্ব ভাতারের বসতপুর গ্রামের চোলাই মদের কারবারীরা। পুলিশ সুপারের কাছে মুচলেকা দিয়ে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। প্রশাসনের লাগাতার অভিযানে চোলাই মদের কারবারীরা ভয় পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের কুনুই নদীর তীরে বসতপুর গ্রাম। বেশিরভাগ বাসিন্দাই কৃষিজীবী। কেউ কেউ আবার অন্যের জমিতেও কাজ করেন। তবে গুসকরা শহর লাগোয়া বসতপুরে চোলাই মদের রমরমা কিছু কম নয়। চোলাই মদের কারবারের সঙ্গে যুক্ত বসতপুরের গ্রামে অন্তত ৫০টি পরিবার। কুনুই নদীর তীরে বড় বড় উনুন বানিয়ে তৈরি করা হত ‘বিষাক্ত গরল’। পুলিশি অভিযান যে একেবারেই হয়নি, এমনটা নয়। গত মাস দুয়েক ধরে রুটিমাফিক বসতপুরে গ্রামে চোলাই মদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছিল ভাতার থানার পুলিশ। কিন্ত, তাতে ব্যবসায় ভাটা পড়েনি। কিন্তু, সম্প্রতি শান্তিপুর বিষমদ কাণ্ডের পরই পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, এক রাতেই যৌথ অভিযান চালিয়ে বসতপুরের গ্রামের বেশ কয়েকটি চোলাই মদের ঠেক ভেঙে দিয়েছে পুলিশ ও আবগারি দপ্তর। ভয় পেয়েছে চোলাই মদের কারবারীরাও। ভয় এতটাই যে, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের মধ্যস্থতায় পুলিশ সুপারের কাছে গণ আত্মসমপর্ণের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে তারা। বস্তুত, পুলিশি ধরপাকড়ের ভয়ে অনেকেই গ্রাম ছেড়েছে বলে জানা গিয়েছে। আতঙ্কে তাদের পরিবারের লোকেরা। ভাতারের বসতপুর গ্রামের গৃহবধূ শীতলা দাস, মঞ্জু দাসরা বলেন, ‘পুলিশ বারবার বাড়িতে আসছে। বাচ্চাদের নিয়ে আতঙ্কে রয়েছি। শান্তিতে বাঁচতে চাই, তাই সকলে মিলে চোলাই মদের কারবার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ এদিকে বসতপুর গ্রামে চোলাই মদ নিয়ে সচেতনতা ফেরায় খুশি স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারাও।
দেখুন ভিডিও:
[ অভিনব উদ্যোগ নবীনদের, ভুলে যাওয়া জামাই আদর ফিরে পেলেন প্রবীণরা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.