সৌরভ মাজি, বর্ধমান: মাটির নিচে গর্ত মজুত মদ তৈরির উপকরণ। চোলাই বিক্রি রুখতে অভিযান চালাতে গিয়ে এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল বর্ধমান পুলিশ ও আবগারি দপ্তরের আধিকারিকেরা। শান্তিপুর বিষমদ কাণ্ডের পর চোলাই মদ বিক্রি রুখতে জেলায় জেলায় অভিযান শুরু করেছিল পুলিশ ও আবগারি দপ্তরের আধিকারিকেরা। এখনও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে জারি তল্লাশি অভিযান। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বর্ধমানের বিজয়রামে অভিযান চালিয়ে হতবাক তদন্তকারীরা। মেঝের নিচে গর্ত থেকে মিলেছে বিপুল পরিমাণ চোলাই মদ ও মদ তৈরির সামগ্রী। উদ্ধার হওয়া মদ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ভেঙে দেওয়া হয়েছে চোলাই তৈরির ৩০টি উনুন। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি তদন্তকারীরা।
জানা গিয়েছে, বর্ধমান শহরের বিজয়রাম, কুড়েপাড়া, কেশরাপাড়ায় দীর্ঘদিন ধরেই চোলাইয়ের রমরমা কারবার। কার্যত কুটির শিল্পের পর্যায়ে চলে গিয়েছিল বেআইনি চোলাইয়ের কারবার। সূত্রের খবর, আগেও একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে ওই এলাকায়। গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল বেশ কয়েকজন অভিযুক্তকে। সূত্রের খবর, এরপর কিছুদিন বেআইনি মদ বিক্রির কারবার বন্ধ থাকলেও ফের তা চালু হয়। গতবছর নভেম্বর মাসে নদিয়ার শান্তিপুরে বিষমদ খেয়ে কয়েকজনের মৃত্যুর পর ফের বর্ধমানে চোলাই ব্যবসা রুখতে অভিযান শুরু করে আবগারি দপ্তর ও পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, বৃহস্পতিবার বিজয়রামে তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেখানে একটি ঘরে চোলাই তৈরির উপকরণ ও হাঁড়ি দেখতে পান আবগারি দপ্তর ও পুলিশ কর্মীরা । উপকরণ নষ্ট করার পাশাপাশি হাঁড়ি ও অন্যান্য সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হয়। এরপর অন্য একটি ঘরে ঢুকে হতবাক হয়ে যান আধিকারিকরা। অভিযোগ, ওই ঘরের মেঝেতে একটি পাটাতন রাখা ছিল। সেটা সরাতেই নিচের গর্তে প্যাকেট ভর্তি চোলাই তৈরির তরল উপকরণ দেখতে পান। সেই সমস্ত সামগ্রী নষ্ট করে পুলিশ। আবগারি দপ্তরের পূর্ব বর্ধমানের সুপারিন্টেন্ডেন্ট তপনকুমার মাইতি জানান, “এদিনের অভিযানে ২২০০ লিটার মত চোলাইয়ের উপকরণ নষ্ট করা হয়েছে। ৩০টি উনুন ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কিছুদিন আগেও এখানে অভিযান চালানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই আবারও অভিযান হবে এখানে।”
আবাগরি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় চোলাই কারবারিরা এইভাবে গর্ত করে ভিতরে চোলাইয়ের প্যাকেট বা উপকরণ রাখে। যাতে সহজে চোখে না পড়ে। তবে পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকায় এদিন তা খুঁজে পেতে কোনও সমস্যা হয়নি। সুপারিন্টেন্ডেন্ট জানিয়েছেন, জেলাজুড়েই ধারাবাহিক অভিযান চলছে। আগামিদিনেও চলবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.