শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ খবর প্রকাশিত হতেই চোলাই মদের বেআইনি কারবার রুখতে অবশেষে নড়েচড়ে বসল ঘাটালের আবগারি দপ্তর৷ শনিবার সদলবলে ঘাটাল ব্লকের মনশুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের বরকতিপুর ও দীর্ঘগ্রাম গ্রামে হানা দেন আবগারি দপ্তরের ডেপুটি এক্সাইজ কালেক্টর গুণধর লোহার৷ সঙ্গে ছিলেন আবগারি দপ্তরের ঘাটাল ওসি তারক মাহাতো৷ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় চোলাই তৈরির কারখানা ও ঠেক৷ নষ্ট করা হয়েছে কয়েক হাজার লিটার চোলাই মদ৷ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে চোলাই তৈরির সরঞ্জামও৷ তবে, অভিযান চললেও এখনও এখনও কাউকেই গ্রেপ্তার করতে করা যায়নি৷ অভিযুক্তদের খোঁজ শুরু হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে৷
এদিনের এই অভিযান প্রসঙ্গে ঘাটাল মহকুমা আবগারি দপ্তরের ডেপুটি এক্সাইজ কালেক্টর গুণধর লোহার বলেন, “এর আগেও বেশ কয়েকবার ওই দুই গ্রামে হানা দেওয়া হয়েছিল৷ এবার থেকে নিয়মিত অভিযান চলবে৷” পাশাপাশি তিনি বলেন, “স্থানীয় বাসিন্দারা সচেতন না হলে এই সমস্ত অসামাজিক কাজ বন্ধ করা খুবই কঠিন৷ আমরা এই দুই গ্রামে একটি সচেতনতা শিবির করব৷”
[দীর্ঘদিন ডিউটিতে অনুপস্থিত, বিচারকের নির্দেশে শ্রীঘরে সিআরপিএফ জওয়ান]
ঘাটাল ব্লকের মনশুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের দীর্ঘগ্রাম ও বরকতিপুর গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে চোলাই মদের রমরমা কারবার চলছে বলে অভিযোগ তোলেন বাসিন্দারা৷ স্থানীয়রাই জানিয়েছেন, ওই দুই গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে চোলাই কারখানা রয়েছে৷ রাত তিনটে থেকে চোলাই তৈরির কাজ শুরু হয় ভোরের আলো না ফোটা পর্যন্ত৷ তারপর দিনভর চলে চোলাই মদের বিক্রি৷ ভোরের আলো ফোটার আগে মোটর বাইকের লাইন পড়ে যায় গ্রামে৷ ঘাটাল ছাড়িয়ে পাচার হয়ে যায় ভিন জেলায়ও৷ চোলাইয়ের রমরমা এতটাই যে, দীর্ঘগ্রামকে বলা হয় চোলাই তৈরির রাজধানী৷ বহু পরিবার এই চোলাই তৈরির কারবারে যুক্ত বলে জানা গিয়েছে৷ বছরের পর বছর এই ভাবেই চলে আসছে চোলাই তৈরি ও কারবার৷ আর তাতেই অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন গ্রামবাসীরা৷
[বউদিকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ, শ্রীঘরে যুবক]
অভিযোগ, পুলিশ ও আবগারি দপ্তরের একাংশের মদতে চলছে এই অবৈধ বেআইনি কারবার৷ গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, যে সমস্ত পুকুরের জল চোলাইয়ের কাজে ব্যবহার করা হয় সেই পুকুরগুলি হয়ে উঠছে মশা মাছির আাঁতুড়ঘর৷ শুক্রবার ‘সংবাদ প্রতিদিন ডট ইন’-এ খবর প্রকাশিত হতেই টনক নড়ে আবগারি দপ্তরের৷ তারপরই শনিবার সকালেই দু’গ্রামে পৌঁছে যান আবগারি দপ্তরের ডেপুটি এক্সাইজ কালেক্টর গুণধর লোহার ও কর্মীরা৷ একের পর এক চোলাই কারখানা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়৷ নষ্ট করা হয় কয়েক হাজার লিটার বিষাক্ত চোলাই মদ৷ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে চোলাই তৈরির সরঞ্জাম৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামে আবগারি দপ্তরের গাড়ি ঢুকতেই চম্পট দিয়েছে চোলাই কারবারিরা৷ ফলে কোনও চোলাই কারবারিকে আটক করতে পারেনি আবগারি কর্মীরা৷ এবিষয়ে গুণধরবাবু বলেন, ঘাটাল মহকুমার যে সমস্ত এলাকায় চোলাই তৈরি ও ঠেক রয়েছে সমস্ত জায়গাতেই হানা দেওয়া হবে৷” দেরিতে হলেও চোলাইয়ের কারখানায় হানা দেওয়ায় খুশি গ্রামবাসীরা৷
ছবি: সুকান্ত চক্রবর্তী
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.