বাবুল হক, মালদহ: পারিবারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রেমিকের সঙ্গে মেলামেশার খেসারত দিতে হল বছর ১৪-এর কিশোরীকে। শাস্তি দিতে মেয়েকে খুনের পর বস্তাবন্দি দেহ গঙ্গায় ভাসিয়ে দিল বাবা-মা। শনিবার সকালে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের ভূতনি গ্রামে। পুলিশি জেরায় নাবালিকার বাবা-মা স্বীকার করে নিয়েছে, পরিবারের সম্মান রক্ষার্থেই নিজের মেয়েকে খুন করেছে তারা।
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ মালদহের ভূতনি চরের পশ্চিম নারায়ণপুর এলাকার মহেন্দ্রটোলার বাসিন্দা ধীরেন ও তার স্ত্রী সুমতি মণ্ডলকে একটি বস্তা টানতে টানতে গঙ্গার দিকে যেতে দেখেন স্থানীয়রা। ঘাটে পৌঁছে একটি নৌকোয় বস্তাটি তুলে দেয় ওই দম্পতি। স্থানীয় এক যুবক আবার তাদের সাহায্যও করে। ওই দম্পতি নিজেরাই নৌকা নিয়ে মাঝ গঙ্গায় পাড়ি দেয়। এরপর মাঝ গঙ্গায় বস্তাটি ফেলে ফের ঘাটে ফিরে আসে তারা।
প্রথম থেকেই ওই দম্পতির আচরণে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। তাঁরাই খবর দেন ভূতনি থানায়। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি গঙ্গার ঘাটে হাজির হয় ভূতনি থানার পুলিশ। ঘাটে ফিরতেই ওই দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে তাঁরা। জেরার মুখে ভেঙে পড়ে ধীরেন ও সুমতি। এরপরই প্রকাশ্যে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
জানা যায়, ধীরেন ও সুমতির নাবালিকা কন্যা প্রতিমা পাশের গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। মেয়ের সঙ্গে ওই যুবকের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি মা,বাব। একাধিকবার মেয়েকে সতর্কও করেছিলেন, কিন্তু তাদের কথা শোনেনি বছর ১৪-এর প্রতিমা। এতেই চরম সিদ্ধান্ত নেয় ওই দম্পতি। পরিকল্পনা করেই মেয়েকে খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য বস্তাবন্দি দেহ ভাসিয়ে দেয় তারা।
পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই বস্তায় ভরা মৃতদেহের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। নামানো হয়েছে ডুবুরি। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, “মৃতার বাবা-মায়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত একটি খুনের মামলা রুজু করেছে। তাদের এক সঙ্গীর খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সূত্রে খবর, মৃতের প্রেমিককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও মামলা রুজু করবে কি না, তা এখনও অজানা৷ যদিও খুনের সঙ্গে কোনওভাবেই ওই যুবকের যোগ নেই বলেই অনুমান তদন্তকারীদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.