সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: রান্নাঘরের গ্যাস সিলিন্ডার পরিবর্তন করার সময় বিপত্তি। গ্যাস লিক করে বিস্ফোরণে ভস্মীভূত হল দুটি বাড়ি ও একটি ব্যাগের কারখানা। সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে রাজাপুর থানা এলাকার বলরামপোতা ২ নম্বর কলোনিতে। ঘটনায় চারজন গুরুতরভাবে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। এদের মধ্যে ত্রিনাথ মহাজন (৪৫), মুনমুন মহাজন (৩৭) ও মৌসুমি মহাজনকে (১৮) অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর এক অগ্নিদগ্ধ বিউটি মহাজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। অগ্নিদগ্ধদের মধ্যে মৌসুমি মহাজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে।
[ভেজাল সস কারবারের পর্দাফাঁস বনগাঁয়, ধৃত মালিক]
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে বলরামপোতা ২ নং কলোনিতে পাশাপাশি দুটি বাড়িতে থাকতেন দুই ভাই গৌতম মহাজন ও ত্রিনাথ মহাজন। ত্রিনাথ মহাজনের বাড়ি সংলগ্ন একটি ব্যাগের কারখানা ছিল। সোমবার দুপুরে রান্নাঘরে গ্যাস ওভেনে রান্না করছিলেন ত্রিনাথবাবুর স্ত্রী মুনমুন মহাজন। ত্রিনাথ মহাজনের বড় মেয়ে মৌসুমি তখন ওই রান্নাঘরে কেরোসিন স্টোভ জ্বালিয়ে মাছ ভাজছিলেন। এদিকে সিলিন্ডারের গ্যাস শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন গ্যাস সিলিন্ডার লাগাতে যান মুনমুন মহাজন। সেই সময় হঠাৎই নতুন সিলিন্ডারটি থেকে গ্যাস লিক করতে শুরু করে। নিমেষের মধ্যে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে সারা রান্নাঘরে। রান্নাঘরে তখন জ্বলন্ত স্টোভ থাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে সারা রান্নাঘরে। ক্রমে রান্নাঘর থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে ত্রিনাথবাবুর গোটা বাড়িতে এবং তাঁর ব্যাগের কারখানায়। সেখান থেকে তাঁর দাদা গৌতম মহাজনের বাড়িতেও আগুন ধরে যায়। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। খবর দেওয়া হয় উলুবেড়িয়া দমকল কেন্দ্রে। দমকলের দুটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায় দুটি বাড়ি ও ব্যাগের কারখানাটি। আগুন লাগার ফলে আগুনে ঝলসে আহত হন ত্রিনাথ মহাজন, মুনমুন মহাজন ও মৌসুমী মহাজন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
[অতিরিক্ত ফেসবুক করার ‘শাস্তি’, স্ত্রীকে কামড়ে শ্রীঘরে স্বামী]
ত্রিনাথবাবুর ছোট মেয়ে তৃষা মহাজন জানান, তিনি বাবার কথামতো দুপুর দেড়টার সময় ব্যাগের কারখানা বন্ধ করে এসে দেখেন রান্নাঘরে তাঁর দিদি স্টোভে মাছ ভাজছে এবং তাঁর মা গ্যাসের সিলিন্ডার পরিবর্তন করছে। আচমকাই বিকট শব্দ করে গোটা রান্নাঘরে আগুন লেগে যায়। দিদি ও মাকে অগ্নিদগ্ধ হয়ে যেতে দেখে তৃষা ভয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। পুরো বাড়ি পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি তাঁদের সমস্ত আসবাব এবং বইপত্রও পুড়ে গিয়েছে বলে তিনি জানান। স্থানীয় উত্তম চক্রবর্তী জানান আগুন লেগেছে বুঝতে পেরে এলাকার সমস্ত মানুষ মিলে বালতি করে জল ঢেলে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। দমকলেও খবর দেন। কিন্তু দমকল আসার আগেই সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। উলুবেড়িয়া-২ নং ব্লকের ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক নিশীথ কুমার মাহাতো জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত দুটি পরিবারের কাছে প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী সাহায্য পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.