দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: বাঁচার খুবই ইচ্ছে ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রতিবেশীরা তাকে বাঁচতে দিল না। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও পোস্ট করে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন হিন্দমোটরের এক যুবক। এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। অভিযোগ, অত্যাচারের সময় পুলিশকে ফোন করে বাঁচার আর্তি জানাতে চাইলেও কেউ তাঁর ফোন ধরেননি। রবিবার হিন্দমোটর (Hindmotor) বিবেক দল স্কুল রোডের বাড়িতেই কুন্তল বোসের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতের অভিযোগ, স্থানীয় কিছু বিজেপি নেতা ও প্রতিবেশীদের অত্যাচারই তাকে বাঁচতে দিল না। কুন্তলের মৃত্যুর পরই উত্তরপাড়া থানার এই ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনার সূত্রপাত মাসতিনেক আগে। কুন্তলের স্ত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় কুন্তলকে গ্রেপ্তারও করা হয়। সম্প্রতি দিনচারেক আগে কুন্তল জামিনে মুক্তি পান। অভিযোগ, মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরে আসার পর তাঁর উপর প্রতিবেশীরা চরম অত্যাচার শুরু করে। সেই অত্যাচারের সহ্য করতে না পেরে শেষপর্যন্ত আত্মহত্যা করে কুন্তল। মৃতের দিদি স্নিগ্ধা দাশগুপ্তর অভিযোগ, রবিবার তাঁর ভাইকে বিজেপি নেতা (BJP leader) মধু-সহ আরও বেশ কয়েকজন ও পাড়ার কিছু মহিলা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ভাইকে ইট ছুঁড়ে মারে। ভাইকে মারার সময় তিনি যাতে কোনও বাধা না দিতে পারেন সে কারণে পাড়ার মহিলারা তাঁকে আটকে রাখেন বলেও অভিযোগ। তাঁর দিদির আরও অভিযোগ, বাড়িটা দখলের উদ্দেশ্যেই ভাইয়ের উপর অত্যাচার চালানো হয়েছিল। কারণ ভাই জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই তাঁকে এখানে থাকতে দিতে রাজি ছিল না বিজেপি নেতা এবং এলাকার বেশ কয়েকজন। বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য চাপ তৈরি করা হয়।
এরপরই আত্মহত্যার (Suicide) আগে নিজের মোবাইলে ভিডিও রেকর্ড করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) আপলোড করেন কুন্তল। সেখানে কুন্তলকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “ওরা ঘরে ঢুকেছিল মারতে। দিদি একা লড়ছে। দিদিকেও খুব মেরেছে। পুলিশকে ১৮ বার ফোন করা হলেও ফোন তোলেনি। বাঁচার খুব ইচ্ছে ছিল। কিন্তু বাঁচতে দিল না।” এরপরই কুন্তল গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। পুলিশ আত্মহতায় প্ররোচনা এবং মারধরের অভিযোগে ৬ জন মহিলা ও ২ জন পুরুষকে সোমবার গ্রেপ্তার করেছে। ধৃত আটজনকেই শ্রীরামপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত মধুর খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.