ছবি: জয়ন্ত দাস
ধীমান রায়, কাটোয়া: এ যেন ’অমাবস্যায় চাঁদের উদয়’। কাটোয়ার ভাগীরথী নদীতে ধরা পড়ল এক কেজি আড়াইশ গ্রাম ওজনের ইলিশ। তাও আবার যে সে দিনে নয়, ভাইফোঁটার আগের দিনেই। রুপোর পাতের মতো ঝকঝকে ইলিশটি কাটোয়ার মাছের বাজারে নিলাম হল ৩৭৫০ টাকায়। ৩০০০ টাকা কিলো দরে।
কিনেছেন কাটোয়ারই এক মাছ বিক্রেতা বাপ্পা দাস। যদিও বৃহস্পতিবার সকালে আড়তদারের কাছে মাছটি কেনার পর বাপ্পা রেখে দিয়েছেন শুক্রবার ভাইফোঁটার দিন মাছটি বিক্রি করবেন বলে। স্থানীয় মাছ বিক্রেতাদের অনুমান, কাটোয়ায় ভাগীরথীতে ধরা পড়া এই ইলিশ মাছটি সর্বোচ্চ ৪০০০ টাকাতেও বিক্রি হতে পারে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে এদিন সকালে কাটোয়ায় ভাগীরথীতে ছোট ডিঙিতে চড়ে জাল দিয়ে মাছ ধরছিলেন কয়েকজন জেলে। তাঁদের মধ্যে একজনের জালে ধরা পড়ে এই ইলিশ। জালে ইলিশ ধরা পড়তেই একেবারে হাতে যেন চাঁদ পেয়ে যান ওই জেলে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ডিঙি পাড়ে ভিড়িয়ে চলে আসেন কাটোয়ার মাছের বাজারে। আড়তদার চাঁদ মাজির কাছে মাছটি নিলাম হয়। মাছ বিক্রেতারা ভিড় করতেই চড়চড় করে দামের পারদ চড়তে থাকে। শেষে বাপ্পা দাস ৩০০০ টাকা কেজি দাম দিয়ে ৩৭৫০ টাকায় কিনে নেন মাছটি।
চাঁদ মাজি বলেন, কাটোয়ার ভাগীরথীতে সচরাচর এই ওজনের ইলিশ পাওয়া যায় না। গত বছর জেলেদের জালে একটি এক কেজি ওজনের মাছ ধরা পড়েছিল। এই মাছটি আরও বড়। দিঘার ইলিশের থেকে বহুগুন সুস্বাদু। চাঁদের কথায়, ”কলকাতার বাজারে এই মাছটি অন্তত ৪০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হত। সে তুলনায় মাছটির দাম কাটোয়ায় অনেকটাই কম।” স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কাটোয়ায় ভাগীরথীতে কালেভদ্রে ধরা পড়ে ইলিশ। মৎস বিশেষজ্ঞ কাটোয়া ব্লক মৎস সম্প্রসারণ আধিকারিক কৌশিক দে বলেন, ” ইলিশ নোনা জলের মাছ। কিন্তু তারা ডিম পাড়ে স্বাদু জলে। তাই পদ্মা ও গঙ্গা নদীতে চলে আসে ডিম পাড়ার উদ্দেশ্যে। তখনই জালে ধরা পড়ে যায়। কৌশিকবাবু আরও বলেন, ডিম পাড়তে এসে ইলিশ এক-দেড় মাস নদীর জলে থেকে যায়। ডিম পাড়া হয়ে গেলে ফিরে যায় সমুদ্রে। কিন্তু এই সময় নদীর জলে বাস করায় তাদের স্বাদ অনেকগুন বেড়ে যায়। সেজন্যই দিঘার সমুদ্রের ইলিশের থেকেও এই সমস্ত মাছের দাম অনেক বেশি হয়।”
ছবি: জয়ন্ত দাস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.