রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: ‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবস’ মানেই ‘সরস সর্ষের ঝাঁজে… ইলিশ উৎসব’। কিন্তু ক্যালেন্ডারের পাতায় এখন আষাঢ় নয়, পৌষ। ভরা বর্ষার বদলে এখন শীতবুড়ো লেপমুড়ি দিয়ে আসার জন্য দিন গুনছে। এখন এক মরশুমে কিনা ইলিশ লাফিয়ে এল ডাঙায়! জলের রুপোলি শস্যকে সমুদ্রের পাড়ে দেখতে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা দিঘাবাসী। কিন্তু জোয়ারের জলের সঙ্গে পাড়ে উঠে আসা ইলিশের বরাত ভাল নয়। উপকূলরক্ষী বাহিনীর চোখে পড়ামাত্রই সদগতি হয় তার। সম্ভবত কিছুক্ষণ পরই কোনও উর্দিধারী বা আমজনতার উদরস্থ হয় সেটি।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার সকালে। রোজকার মতো অনেকেই সাতসকালে সমুদ্রতটে ঘুরতে গিয়েছিলেন। কেউ কেউ সৈকতে বসায় জায়গায় বসে সমুদ্রের হাওয়া প্রাণভরে শরীরে ভরে নিচ্ছিলেন। কেউ আবার চোখ ভরে দেখছিলেন সলিলের নীলাভ জলরাশি। এমন সময় কয়েকজনের চোখে পড়ল ডাঙায় সিমেন্ট বাঁধানো পাড়ে ছটফট করছে জলের উজ্জ্বল শস্য। সূর্যের আলো পড়ে ঠিকরে বেরোচ্ছে জৌলুস। সঙ্গে সঙ্গে হইহই পড়ে যায় উপকূলে। ইলিশ কার দখলে যাবে সেই নিয়ে শুরু হয়ে যায় দড়ি টানাটানি খেলা।
তবে ইলিশের আকার বেশি বড় নয়। মাঝারি সাইজের। কিন্তু পৌষে ইলিশ পাওয়া কি চাট্টিখানি কথা? এ তো পুরো হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো ঘটনা। কিন্তু শিকে ছিঁড়ল না কারওর ভাগ্যেই। মোহনায় আত্মপ্রকাশ করা সেই ‘সেলিব্রিটি’ ইলিশ মাছটিকে উপকূলরক্ষীরা ‘উদ্ধার’ করে নিয়ে গেল। কিন্তু গেল কোথায়? না জলের শস্য আর জলে ফিরে যায়নি। উদ্ধারের পর তার খবর আর কেউ জানে না। ঘণ্টাখানেকের জন্য দিঘাবাসীকে মাতিয়ে ইলিশ হয়ে গেল নিখোঁজ। অবশ্য নিন্দুকরা অনেকেই বলছেন, রক্ষীদেরই কারওর উদরস্থ হয়েছে আচম্বিতে ডাঙায় উঠে পড়া সেই ইলিশ। কিন্তু পাকাপোক্ত খবর কারওর কাছেই নেই। ইলিশ যাওয়ার পর সবাই যে যার রুজি রুটির কাজে লেগে পড়েন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.