সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: ভরা কোটালের জলে প্লাবিত সুন্দরবন লাগোয়া নামখানা, সাগরের বিস্তীর্ণ এলাকা৷ দোলপূর্ণিমায় বঙ্গোপসাগরের কোটালে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে সমুদ্র সংলগ্ন বিভিন্ন অঞ্চলে ঢুকে পড়েছে জল৷ পাশাপাশি জলের তোড়ে হুগলি নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বেশ কয়েকটি অঞ্চল।
গঙ্গাসাগরের বোটখালি, বেগুয়াখালি, শিবপুর-সহ বেশ কিছু এলাকায় পূর্ণিমার কোটালের সময় জলের তোড়ে অস্থায়ী নদীবাঁধ ভেঙে যায়। হুগলি নদীর নোনা জল ঢুকে পড়ে বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষের জমিতে। ব্যাপক ক্ষতি হয় ধান ও সবজি চাষের। পাশাপাশি নদীর জল ঢুকে পড়ে বসতি এলাকাতেও। নামখানার মৌশুনি দ্বীপ এলাকার বালিয়াড়া এবং সাগরের বোটখালির সাউঘেরিতে চাষের জমি ও জনবসতিতে জল ঢুকে পড়ে। বিপদে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ক্ষোভপ্রকাশও করেছেন তাঁরা৷ অভিযোগ, ভোটের মরশুমে রাজনৈতিক দলের নেতা, প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতি দেন পাকাপোক্ত নদীবাঁধ তৈরি করে দেওয়া হবে। কিন্তু কাজের কাজ হয় না কিছুই। ভোট হয়ে গেলে সকলেই সবকিছু ভুলে যান। এমনকি আলগা নদীবাঁধগুলির মেরামতির কথাও মনে পড়ে না কারোরই। এদিন এলাকা জলমগ্ন হওয়ার পর তাঁদের দাবি, স্থায়ীভাবে নদীবাঁধগুলি তৈরি করতে হবে।
সাগরের বিধায়ক তথা বকখালি-গঙ্গাসাগর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান বঙ্কিম হাজরা অবশ্য জানিয়েছেন, বোটখালির সাউঘেরি ও মৌশুনির বালিয়াড়ায় ইন্দ্রপল্লিতে কংক্রিটের নদীবাঁধ তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। সেই কাজ চলাকালীন কয়েকদিনের নিম্নচাপের বৃষ্টি আর দক্ষিণের ঝোড়ো হাওয়ায় ওই এলাকাগুলিতে নদীর জল ফাঁকফোকর দিয়ে চাষের জমিতে ঢুকে পড়েছে। কিছু বাড়িও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে৷ তার মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে আশ্বস্ত করেছেন বিধায়ক৷ তাতে অবশ্য খুব একটা ভরসা পাচ্ছেন না মানুষজন৷ তাঁদের পূর্ব অভিজ্ঞতা ততটা ভাল নয় বলেই জানাচ্ছেন৷ আয়লা পরবর্তী সময়ে সুন্দরবন সংলগ্ন এই এলাকাগুলি সামান্য ঝড়বৃষ্টিতেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে৷ তাৎক্ষণিকভাবে কোনওক্রমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেলেও, তা খুব শক্তপোক্ত কিছু হয় না৷ তাই খুব কম সময়ের মধ্যেই তা ভঙ্গুর হয়ে পড়ে৷ জোয়ারের জলে ফের প্লাবিত হয় এসব এলাকা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.