Advertisement
Advertisement
Valentine's Day

বেঙ্গালুরু থেকে বঙ্গে ডাচ গোলাপ, ভ্যালেন্টাইন উইকে হু হু করে বাড়ছে চাহিদা

ডাচ গোলাপ 'ব্যাঙ্গালোর রোজ' নামেই পরিচিত।

High demand of Rose in Valentine's week, Dutch Rose comes from Bangalore । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:February 8, 2024 5:47 pm
  • Updated:February 9, 2024 11:42 am  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: পাঁচ লাখ, দশ লাখ নয়। ‘ভ্যালেন্টাইন উইকে’ বাংলায় গোলাপের চাহিদা ৫০ লাখেরও বেশি! যা শুরু হয়ে গিয়েছে বুধবার ‘রোজ ডে’ থেকেই। রাজ্যের মিনিপল, ম্যাটগোল্ডে সেভাবে যে মন ভরে না প্ৰিয় মানুষের। তাই রূপ-গন্ধে আরও দামি ডাচ গোলাপ সঙ্গীনিকে দিতে বেঙ্গালুরু থেকে বিমানে আসছে। এদিকে এদিন ‘রোজ ডে’ থেকেই গোলাপের দাম চড়তে শুরু করেছে মহানগর থেকে শহরতলি। জেলা সদর ছাড়িয়ে মফস্বলেও। তবে মিনিপলের দাম আগের চেয়ে ঊর্ধ্বমুখী হলেও সেভাবে বাড়েনি।

এখানেও সেই আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা। উত্তুরে বাতাসের দাপট একেবারে কমে যাওয়ায় দখিনা বাতাসে গোলাপের ফলন হচ্ছে ব্যাপকভাবে। তাই মিনিপল গোলাপের উৎপাদন বেশি হওয়ায় কলকাতা মল্লিকঘাট ফুলবাজারে পাইকারি দরে দাম একেবারে হাতের নাগালের মধ্যেই রয়েছে। সারা বাংলা ফুল চাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, ” রোজ ডে থেকে শুরু হয় ‘ভ্যালেন্টাইন উইক’। আর এই দিন থেকেই রাজ্যে গোলাপের চাহিদা বাড়তে থাকে। ফি বছর এই সাত দিনে বাংলায় ৫০ লক্ষের বেশি গোলাপ বিক্রি হয়। এ রাজ্যে মূলত মিনিপল আর ম্যাটগোল্ডের ফলন হয়। কিন্তু এই ভালোবাসার মরশুমে ডাচ গোলাপের চাহিদা কম থাকে না। কিন্তু এই গোলাপ এখানে পরীক্ষামূলকভাবে হলেও বাণিজ্যিক হারে তা হয় না। তাই ‘ভ্যালেন্টাইন উইক’-এ বেঙ্গালুরু থেকে বিমানে ডাচ গোলাপ আসছে। লাল মিনিপল ছাড়া অন্যান্য গোলাপের দাম এদিন থেকেই ঊর্ধ্বমুখী।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: লোকসভা ভোটের আগে মাস্টারস্ট্রোক! ফের ডিএ বাড়ল রাজ্য সরকারি কর্মীদের]

সারা বাংলা ফুল চাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ‘রোজ ডে’-তে মিনিপল লাল গোলাপের কুঁড়ি বিক্রি হয়েছে প্রতি পিস ১ টাকা। হলুদ গোলাপের কুঁড়ি প্রতি পিস ৫ টাকা, গোলাপি রঙের গোলাপের কুঁড়ি প্রতি পিস ৬ টাকা, সাদা রঙের গোলাপের কুঁড়ি প্রতি পিস ৭ টাকা। ম্যাটগোল্ড প্রজাতির গোলাপের কুঁড়ি প্রতি পিস সাড়ে তিন টাকা দরে বিক্রি হয়। অন্যদিকে ডাচ গোলাপ বিক্রি হয় প্রতি পিস ২৫ টাকা। এ সবই কলকাতা মল্লিকঘাট ফুলবাজারের পাইকারি দর। এখান থেকে ফুল নিয়ে ব্যবসায়ীরা কলকাতা ও শহরতলির নানা প্রান্ত-সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছেন। এমনকি উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়িতেও।

দেখুন ভিডিও:

ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই জেলায়- জেলায় একটি লাল মিনিপল এদিন বিক্রি হয় ১৫ টাকায়। ডাচ গোলাপ বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়। পুরুলিয়া শহরের চকবাজারের ফুল ব্যবসায়ী সৌমেন সামন্ত বলেন, “আমাদের এই গোলাপ কলকাতার মল্লিকঘাট ফুল বাজার ছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুর থেকে নিয়ে আসতে হয়। রাজ্যের সব জায়গায় তো গোলাপ চাষ হয় না। তাই স্বাভাবিকভাবে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে হয়। না হলে লাভ দেখতে পাওয়া যায় না। সেই কারণেই আমরা লাল মিনিপল ১৫ টাকা, ডাচ গোলাপ ৫০ টাকায় বিক্রি করছি।” মাঝেমধ্যেই বেঙ্গালুরু থেকে ডাচ গোলাপ বাংলায় আসে। মল্লিকঘাট ফুল বাজারেই নামে চোখ জুড়িয়ে যাওয়া এই গোলাপ। তার পর সেখান থেকে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ হয়। তবে এই ‘ভালোবাসার সপ্তাহ’-এ যত এগিয়ে যাবে ততই দাম বাড়তে থাকবে গোলাপের।

তাই রাজ্যের বিভিন্ন জেলার ফুল ব্যবসায়ীরা মল্লিক ঘাট ফুলবাজার থেকে গোলাপ কিনে তা বহুমুখী হিমঘরে মজুত করতে শুরু করেছেন। এই ফুল যে চুমুর দিন অর্থাৎ ১২ ই ফেব্রুয়ারি কিস ডে তে হিমঘর থেকে বার করবেন ব্যবসায়ীরা। এদিন রোজ ডে, বৃহস্পতিবার প্রপোজ ডে ছাড়া এই সপ্তাহের শেষ দু’দিন কিস ডে ও ভ্যালেন্টাইনে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। সেই কারণেই বিপুল চাহিদা মেটাতে বেঙ্গালুরু থেকে বিমানের ডাচ গোলাপ নিয়ে আসা হচ্ছে বলে সারা বাংলা ফুল চাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির তরফে জানানো হয়েছে। এই ডাচ গোলাপের ডাঁটা একেবারে কাঁটাবিহীন ১৬ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। জলের মধ্যে ডুবিয়ে রাখলে প্রায় ২০ দিন পর্যন্ত থাকে। আসলে এই ফুল গ্রিন হাউস পদ্ধতিতে চাষ হয়। উত্তরবঙ্গে এই চাষ শুরু হলেও তা বাণিজ্যিক হারে পৌঁছাতে পারেনি। মিনিপল ও ম্যাটগোল্ড ভ্যারাইটি মূলত এ রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া জেলাতে ব্যাপক ভাবে চাষ হয়। ডাচ গোলাপ ‘ব্যাঙ্গালোর রোজ’ নামেও পরিচিত।

কর্নাটকের আনেকল, তুমাকুরু-র মতো এলাকায় এই ডাচ গোলাপ ব্যাপক হারে চাষ হয়। এই গোলাপ যে শুধু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রপ্তানি হয় তা নয়। মার্কিন মুলুক থেকে জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ড দুবাই, জাপান, মালয়েশিয়া সিঙ্গাপুরে যায়। এমনই কদর এই ডাচ রোজের। এই ফুলের লাল গোলাপকে বলা হয় ‘তাজমহল’। হলুদ রঙাকে ‘গোল্ড স্ট্রাইক’, সাদা ও পিচ রঙাকে ‘এওয়ালেন্স’। গোলাপিকে ‘নবলেস’। তবে মনের মানুষটির যে ‘তাজমহল’ই সবচেয়ে প্রিয়।

ডাচ নামা

  • বেঙ্গালুরু থেকে কম-বেশি ১৫০ কিলোমিটার দূরে এই গোলাপের চাষ হয়।
  • রঙ অনুযায়ী নানা নাম- ‘তাজমহল’, ‘গোল্ড স্ট্রাইক’ , ‘অ্যাওয়ালেন্স’, ‘নবলেস’।
  • দেশ ছাড়াও বিদেশেও রপ্তানি হয়ে থাকে এই গোলাপ।
  • উঁচু জমিতে লাল বালি মাটিতে ২৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে গ্রীন হাউস পদ্ধতিতে চাষ হয়।
  • ভালোবাসার মরশুমে প্রতিদিন দেশেই রপ্তানি হয় প্রায় ৫ লক্ষ গোলাপ।

[আরও পড়ুন: দিল্লির জল বোর্ডের দুর্নীতির টাকা যেত আপের নির্বাচনী তহবিলে, চাঞ্চল্যকর দাবি ইডির]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement