Advertisement
Advertisement

Breaking News

Bengal BJP

নড়বড়ে সংগঠন, ভোগাচ্ছে নেতৃত্বের অন্তর্কলহ, বিধানসভায় তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে বিজেপি?

বঙ্গ রাজনীতিতে বিজেপির উত্থানটা উনিশ শতকের একেবারে শেষের দিকে।

Here is how Lok Sabha poll likely to reflect on Bengal assembly Election for BJP
Published by: Paramita Paul
  • Posted:June 5, 2024 8:48 pm
  • Updated:June 5, 2024 8:53 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল বিস্তর। ছিল সন্দেশখালির জনরোষ। সামনে ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখ। রামমন্দির আবেগ। সবমিলিয়ে জমি তৈরিই ছিল। তবু লোকসভা ভোটে ফসল ঘরে তুলতে পারল না বঙ্গ বিজেপি। উলটে নিজেদের তৈরি জমি নষ্ট করল তারা। উত্তরে আসন খোয়াল, ধস নামাল ভোটব্যাঙ্কে। প্রায় মুছে গেল জঙ্গলমহল থেকে। রাজ্যের অন্যান্য অংশেও ফল ভালো নয়। এখন কথা হচ্ছে, একুশের ভোটের আগে বিজেপির হাতে ছিল ১৯ সাংসদ। তার পরেও একুশের বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে হালে পানি পায়নি তারা। এবার মাত্র ১২ সাংসদ নিয়ে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে কীভাবে লড়াই করবে তারা? উঠছে প্রশ্ন। তবে প্রশ্ন একটা নয়, অনেকগুলো। এত ভালো জমি থাকতেও কেন ফসল ঘরে তুলতে পারল না শুভেন্দু-সুকান্তরা? গলদটা কোথায়?

ভারতীয় জনতা পার্টি প্রতিষ্ঠাটা হয়েছিল এক বঙ্গ তনয়ের হাত ধরেই। ডা. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। কিন্তু বঙ্গ রাজনীতিতে বিজেপির উত্থানটা উনিশ শতকের একেবারে শেষের দিকে। ১৯৯৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে দুজন সাংসদ হয়েছিলেন। তার পর প্রতিটা নির্বাচনে লড়াই করলেও সেই অর্থে সাফল্য আসেনি। ২০০৯ সালে দার্জিলিং আসনটি এসেছিল তাদের হাতে। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে তেমন একটা দাগ কাটতে পারেনি। এর পরই ঐতিহাসিক ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিংয়ের পাশাপাশি আসানসোল আসনটিও জিতে নেন বিজেপি সাংসদ। এর পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৮-র পঞ্চায়েতে বাংলায় ছাপ ফেলেছিল তারা। সেই হাওয়া ধরে রেখে উনিশের লোকসভা ভোটে ব্যাপক ফল করে তারা। ১৮ আসন জিতে নেয়। মনে করা হয়েছিল, একুশে তৃণমূলকে সরিয়ে বঙ্গে সরকার গড়বে। কিন্তু ভোটবাক্স খুলতেই বিজেপির সেই আশায় জল পড়ে যায়। সরকার গড়া তো দূরে থাক, তিন অঙ্ক পার করতে পারেনি গেরুয়া শিবির। ৭৭-এ থামতে হয় দিলীপ ঘোষ-সুকান্ত মজুমদারদের। সেই শুরু। এর পর আর ঘুড়ে দাঁড়াতে পারেনি তারা। ক্রমাগত দল ভেঙেছে। সামনে এসেছে অন্তর্দ্বন্দ্ব। বঙ্গে ক্রমাগত পিছিয়ে পড়েছে তারা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে বিপর্যয় বিজেপির, ইস্তফা দিতে চান ফড়নবিস]

এই লোকসভা ভোটে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, সন্দেশখালি ইস্যুতে ধোঁয়া আর রামমন্দিরের আবেগকে হাতিয়ার করে লড়তে নেমেছিল তারা। মনে করেছিল, ৩০টি আসন পাবে। কিন্তু থামতে হয় ১২-তেই। যা থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়, নড়বড়ে সংগঠন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো দাপুটে নেত্রী চ্যালেঞ্জ করা যায় না। হিসেব বলছে, ২০১৯-এ তৃণমূলের সাকুল্যের ভোট শতাংশ ছিল ৪৪। এবার তাদের ৩ শতাংশ ভোট বেড়েছে বলে প্রাথমিক হিসাব সামনে এসেছে। বিজেপির ছিল ৪১ শতাংশ। তা ৩৭-এ পৌঁছেছে বলে জানা যাচ্ছে। এই হিসাবই বুথ ফেরত সমীক্ষায় ২ থেকে ৩ শতাংশ বাড়বে বলে দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।

রাজনৈতিক মহল বলছে, লোকসভা ভোটের ফলের দিকে নজর রাখলেই বোঝা যায় কীভাবে সংগঠনের উপর নির্ভর করেছে বিজেপির ভোট। উনিশের নির্বাচনে ১৮ আসন পাওয়ার পর রাজ্যজুড়ে বিজেপির পক্ষে একটা হাওয়া উঠেছিল। ফলে বহু নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিল। অন্য দলের কর্মীরা দলবদল করেছিল। বুথস্তরেও সংগঠন বেড়েছিল।  তৃণমূল বিরোধী রোষও তৈরি হচ্ছিল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যারিশমার সামনে একুশের লড়াইয়ে তা পুরোপুরি কাজে আসেনি। বর্তমানে তো বাংলায় বিজেপির সংগঠন নড়বড়ে। বুথস্তরে সংগঠন নেই। মণ্ডল স্তরেও তথৈবচ অবস্থা। নিষ্ক্রিয় অধিকাংশ কর্মী। নেতৃত্বের অন্দরেও দ্বন্দ্ব। এই প্রতিকূলতার মাঝে ২০২৬ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ করা কার্যত অসম্ভব। যে হারে দল ভাঙছে, তাতে বুথস্তরে সংগঠন ধরে রাখাও বেশ কঠিন হয়ে পড়ছে গেরুয়া শিবিরের পক্ষে। এমনকী, দলের নেতৃত্বও প্রশ্নের মুখে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আর ভোটবাক্সে বার বার হতাশ হওয়ার পর কজন স্থানীয় নেতা সক্রিয়ভাবে দলের কাজ করবে তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। ফলে আগামী বিধানসভা ভোটের আগে দলের খোলনলচে বদল করতে না পারলে তৃণমূল সুপ্রিমোকে চ্যালেঞ্জ করা বেশ কঠিন হবে বিজেপির।

 

[আরও পড়ুন: ভোটবাক্স খুলতেই উধাও ৩০ লক্ষ কোটি টাকা! বাজারকে প্রভাবিত করতেই কি এক্সিট পোল ‘স্ক্যাম’?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement