সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদা ঝাউগাছ ঘেরা গ্রাম দিঘা নাকি সুন্দরী,গরান, গেঁওয়ার সুন্দরবন – সুপার সাইক্লোন রুখতে কার কত দম? আমফান আসার প্রাক্কালে এই তুলনামূলক বিচার করতে বসে আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের মত, সুন্দরবনের শক্তি বেশি, দিঘা দুর্বল। তাই আমফানে সুন্দরবনের চেয়ে দিঘায় অনেক বেশি দাপট দেখাবে।
এখন যতদূর চোখ যায়, রংবেরঙের বাহারি ইটবসানো কংক্রিটের মেরিন ড্রাইভ। অথচ বছর পনেরো-কুড়ি আগে পর্যন্তও দিঘা সৈকত মানেই ঝাউগাছের সারি আর বালিয়াড়ি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আরও পর্যটক টানতে সৌন্দর্যায়নের লক্ষ্যে এমন মেরিন ড্রাইভ বদলে দিয়েছে ‘গ্রাম্য’ দিঘার পরিবেশ। শুধু কি দিঘা, পাশের মন্দারমণি, তাজপুর, শংকরপুরের ধু ধু বালিয়াড়ি এলাকাজুড়ে পর্যটনস্থল। কোথায়ই বা ঝাউয়ের সারি, কোথায়ই বা বালির নিচে শক্ত মাটির ভিত? দিঘার চেহারা এখন শহুরে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শহুরে চেহারার হাত ধরেই দিঘার বুকে নেমে এসেছে বিপদের চোরা স্রোত। বস্তুত কোনওরকম ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার মতো প্রাকৃতিক পরিবেশই আর নেই দিঘায়।
এ বিষয়ে পরিবেশবিদ অর্ক চৌধুরির কথায়, সৌন্দর্যায়নের লক্ষ্যে দিঘায় যখন ঝাউগাছ কেটে ফেলা হচ্ছিল, তখন সতর্ক করা হয়েছিল, এই হারে ঝাউবন নিকেশ হলে, পরবর্তী সময় সমস্যা হবে। তখন কর্ণপাত করা হয়নি। দিঘার যা অবস্থা, তাতে যে কোনও দিন সমুদ্রগর্ভে চলে যাবে। হতেই পারে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফানের দাপটেই তার সমস্ত সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে।” আমফানের গতিবিধির কথা শুনে তো এনডিআরএফ, জেলা প্রশাসনেরও একই আশঙ্কা। তাঁদের মতে, এতদিনকার ঘূর্ণিঝড়গুলো তেমন ক্ষতি করেনি দিঘার। তবে এবার বেশ বড়সড় ক্ষতিই হয়ে যেতে পারে সৈকত শহরের।
এবার সুন্দরবনের দিকে চোখ রাখা যাক। সেখানে ম্যানগ্রোভের আয়তন কমে এলেও, সুন্দরী, গরানদের পোক্ত শেকড় এখনও মাটি আঁকড়ে রেখেছে। তাই ফণী, বুলবুলের তাণ্ডব থেকে এখনও সুন্দরবন অঞ্চলকে অনেকাংশেই রক্ষা করেছিল এই ম্যানগ্রোভ অরণ্য। বিশেষজ্ঞদের মত, আমফানের প্রবল দাপটের মুখেও রুখে দাঁড়াবে এই গাছের দল। তাই দিঘার তুলনায় কম ক্ষতি হবে সুন্দরবনের। তার রক্ষাকবচ এখনও সঙ্গেই আছে যে। ঝাউয়ের সারির মতো সাফ হয়ে যায়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.