সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টানা তিন দিন নাগাড়ে বৃষ্টি। মঙ্গলবার থেকে মহানগরে কিছুটা স্বস্তি মিলতে চলেছে। মুষলধারে নয়, ঝিরঝিরে বা কখনও কয়েক পশলা বৃষ্টি হতে পারে। এমনই পূর্বাভাস আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের। নিম্নচাপ ক্রমশ ঝাড়খণ্ডের দিকে সরে যাওয়ায় কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলাগুলিতে বর্ষণের পরিমাণ কমতে থাকবে। তবে এই কারণেই পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে বৃষ্টি চলবে। এদিকে ডিভিসির দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে নতুন করে জল ছাড়ায় বর্ধমান এবং হুগলির একাংশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
কলকাতা, হাওড়া এবং দুই চব্বিশ পরগনার খানিকটা রেহাই। তবে দুর্ভোগ থেকে এখনই মু্ক্তি নেই পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ার। নিম্নচাপের ভাবগতিক এমনই বলছে। আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে, ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় শনিবার থেকে অঝোরে বৃষ্টি চলছিল দক্ষিণবঙ্গে। নিম্নচাপ ধীরে ধীরে ঝাড়খণ্ডের দিকে সরছে। তার জন্যই পশ্চিমাঞ্চলের পাঁচটি জেলা ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি জারি থাকবে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী মঙ্গলবার বেলা থেকে ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। আকাশ দিনভর মেঘলা থাকলেও ভারী বৃষ্টি আর হওয়ার সম্ভাবনা কম। বিক্ষিপ্তভাবে কয়েক পশলা বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে ফের দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ায় চিন্তা বাড়ছে দুই জেলার। রবিবারের পর সোমবার রাতে ছাড়া হয় ৫২৪০০ কিউসেক জল। এই জলে বর্ধমান সদর এবং আরামবাগ মহকুমার একাংশ ডুবতে পারে। প্রশাসনের ধারণা আর এক দফা জল ছাড়া হলে ওই এলাকাগুলিতে বন্যা অনিবার্য। বাঁকুড়ায় এখনও বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে দ্বারকেশ্বর এবং গন্ধেশ্বর নদী। কুয়ে নদীর জলে বীরভূমের সিউড়ি ও মহম্মদবাজারের যোগাযোগ এখনও বিচ্ছিন্ন। সোমবার রাত থেকে টানা বৃষ্টি হওয়ায় কুয়ে নদী ফুঁসছে। কুয়ের জল লাঘাটা সেতুর ওপর দিয়ে বইছে। তবে সিউড়ি-কাটোয়া রুটে জল খানিকটা নেমেছে। ময়ূরাক্ষীর জল বাড়ায় তিলপাড়া ব্যারাজ থেকে জল অল্প অল্প করা ছাড়া হচ্ছে। ময়ূরাক্ষীর বদ্বীপের মধ্যে থাকা ১২টি গ্রামের বাসিন্দারা বিপদে পড়েছেন। জলভাসি একই ছবি পশ্চিম মেদিনীপুররে ঘাটালে। এই ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় নেমেছে নৌকা। জলে ডুবেছে ঘাটাল-চন্দ্রকোণা রোড। এই জেলার ডেবরার তিনটি গ্রাম জলবন্দি। পার্শ্ববর্তী পূর্ব মেদিনীপুরে তেমন সমস্যা না হলেও দিঘায় শুরু হয়েছে জলোচ্ছ্বাস। পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধ করেছে প্রশাসন। পাশাপাশি উপকূলবর্তী গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে।
ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া নিয়ে ইতিমধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ঝাড়খণ্ড না জানিয়ে জল ছেড়েছে। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইঙ্গিত তেমনই। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি সব জেলার ডিএমদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক করেন। জেলাগুলিতে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। উদ্ধারকাজের জন্য তৈরি রাখা হয়েছে বোট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.