রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: অর্ধেক বুথে সংগঠন নেই। নিচুতলায় কোন্দলে জেরবার দল। একুশের ভোটে বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে সব নির্বাচনেই ব্যর্থ দল। দলের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, এই মুহূর্তে লোকসভা ভোট হলে পাঁচটি আসনেও জয় নিশ্চিত নয়। আর তাই এবার বিধানসভাভিত্তিক সংগঠনে নজরদারি চাইছে বিজেপির (BJP) শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে একজন করে ‘হেডমাস্টার’ নিয়োগ করতে চলেছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু চব্বিশের ভোটের দিকে লক্ষ্য রেখে ঘুরে দাঁড়াতে এই পাঠশালা চালু করলেও তার সুফল সংগঠন কতটা পাবে তা অবশ্য নিশ্চিত নয় দলের নেতাদের কাছেও।
হেডমাস্টারের নজরদারি চললেও, দলের অন্তর্কলহ না থামলে চব্বিশে মহাবিপদ দেখছে বিজেপি নেতৃত্ব। সংগঠন শক্তিশালী না হলে অমিত শাহর দেওয়া ৩৫ আসনের টার্গেটের ধারেকাছেও পৌঁছনো যাবে না তা জানেন রাজ্য বিজেপি নেতারা। তাই বিধানসভাভিত্তিক সংগঠন মজবুত করতে ২৯৪ জন নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের কাজ হবে যেসব বুথে বিজেপি দুর্বল, সেখানে দলের সংগঠনের হাল ফেরানো। প্রতি বুথে ডিসেম্বরের মধ্যে কমিটি গঠন শেষ করা। উনিশের লোকসভা ভোটে পরাজিত দুর্বল বুথগুলিতে বিশেষ নজর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। সংগঠনের বুথ ও মণ্ডল কমিটির পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে ফের বুথ সশক্তিকরণ অভিযানে নামতে হচ্ছে রাজ্য বিজেপিকে। তিনবারেও লক্ষ্য পূরণ হয়নি।
এখনও পর্যন্ত যা হিসাব, অর্ধেক বুথেও পৌঁছতে পারেনি পদ্ম শিবির। তাই এবার মণ্ডল থেকে বুথের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে নেতাদের। তবে তাতেও কতটা লাভ হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এক রাজ্য নেতার কথায়, এর আগে মণ্ডলে হাজার সভার কর্মসূচি সম্পূর্ণ হয়নি। ৪-৫টি করে বিধানসভা কেন্দ্রে রাজ্য নেতাদের প্রবাস কর্মসূচি করতে বলা হয়। তাও সর্বত্র হয়নি। অনেক জায়গাতেই রিপোর্ট নেওয়ারই লোক নেই। আবার ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত বুথ সংগঠন শক্তিশালী করতে অভিযান শুরুর নতুন সার্কুলার দেওয়া হয়েছে।
‘এক নেতাকে এক বুথ’ অনুযায়ী নেতৃত্বকে নিয়োগ করা হচ্ছে। সব মণ্ডলে প্রবাস করতে হবে নেতাদের। একজন কার্যকর্তাকে দু’টি মণ্ডলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দলের একাংশের বক্তব্য, নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হলেও, দেখা যাচ্ছে কোথাও সংগঠন তৈরি করার লোক নেই। কোথাও আবার লোক থাকলেও, বড় অংশ সেখানে নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছে। ফলে সংগঠন শক্তিশালী করার সমস্ত পরিকল্পনাই কার্যত মাঠে মারা যাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.