রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: একাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে হোয়াটসঅ্যাপে কুরুচিকর মেসেজ পাঠালেন প্রধান শিক্ষক। এমনই এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল পলাশীপাড়া থানার সাহেবনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে। প্রধান শিক্ষককে স্কুলের অফিস ঘরে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা। পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে উদ্ধার করতে এলে অভিভাবকরা দাবি তোলেন পুলিশের গাড়িতে নয়, রাস্তা দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে যেতে হবে শিক্ষককে। বিক্ষোভের জেরে বন্ধ হয়ে স্কুলের পঠন-পাঠন।
ঠিক কী হয়েছিল? সাহেবনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অপূর্বকুমার রায় এক ওই ছাত্রীর সঙ্গে চ্যাট করেছিলেন। সেই চ্যাট অশ্লীল বলে অভিযোগ অভিভাবক ও গ্রামবাসীদের। ওই চ্যাটের স্ক্রিনশট বেশ কয়েকজনের মোবাইলে চলে যায়। ফলে ঘটনাটি প্রকাশ্যে চলে আসে। গ্রামবাসীরা মাস পিটিশন জমা দেন স্কুলে। সেখানে তাঁরা অভিযোগ করেন, স্কুলের এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রধান শিক্ষক অশ্লীল চ্যাট করছেন। এরই পাশাপাশি স্কুলে ঠিকমতো ক্লাস হয় না, শৌচাগারের অবস্থা খারাপ, পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই, মিড ডে মিল ছাত্রছাত্রীরা যেখানে সেখানে বসে খায় এই অভিযোগগুলিও করা হয়।
এরপরই গ্রামবাসীরা মাইকিং করে সকলকে স্কুলের সামনে মঙ্গলবার জমায়েত হতে বলেন। সেই মতো মঙ্গলবার দুপুরে স্কুলের সামনে অভিভাবক ও গ্রামবাসী জড়ো হন। পরে তাঁরা স্কুলে ঢুকে প্রধান শিক্ষকের ঘরে গিয়ে তাঁকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। জানা যাচ্ছে, প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরে মেনে নেন প্রধান শিক্ষক। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠলে খবর পেয়ে পুলিশ স্কুলে পৌঁছায়। পরে প্রধান শিক্ষকের লিখিত বয়ানে ঘেরাও ওঠে।
এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষক অপূর্বকুমার রায় জানাচ্ছেন, ”আমি কোনও খারাপ চ্যাট করিনি। ওই ছাত্রী একাদশ শ্রেণির একটি ইংরাজি কবিতা বুঝতে পারছিল না। তাই বুঝিয়ে দিয়েছিলাম।” কেন কোনও অশ্লীল বার্তা না দিয়েও তিনি মুচলেকা দিলেন, তার উত্তরে প্রধান শিক্ষক বলেন, ”আমার জন্য স্কুলের এই সমস্যা তৈরি হয়েছিল। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের সমস্যা না হয় এবং পড়ুয়াদের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকার সম্পর্ক স্বাভাবিক থাকে সেকথা মাথায় রেখেই আমি সকলের সহযোগিতা প্রার্থনা করে এই বয়ান লিখেছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.