শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: নিউ ফরাক্কা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষাবর্ষে রুটিন কার্যকর করা নিয়ে শিক্ষকদের মারপিট। ঘটনায় পা ভাঙল প্রধান শিক্ষকের। অভিযোগের তির স্কুলের শিক্ষক তথা তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক তারিফ হোসেন-সহ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার। তীব্র উত্তেজনা স্কুলে।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলের অ্যাকাডেমি কাউন্সেলিংয়ের সদস্য তারিফ হোসেন, সৌরভ আলি, সুজয় স্বর্ণকার, কিরণচন্দ্র দাস। এই চার শিক্ষক স্কুলের নতুন শিক্ষাবর্ষের রুটিন তৈরির দায়িত্বে ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নতুন রুটিন তৈরি করে খসড়া প্রধান শিক্ষককে না দেখিয়েই সেই রুটিন অনুযায়ী ক্লাস শুরু করে দেন। তা দেখে লিখিতি অভিযোগ জানান কিছু শিক্ষক। তারপরই প্রধান শিক্ষক নতুন রুটিন বাতিল করে শিক্ষকদের গ্রুপে একটি বার্তা দেন। তাতেই শুরু হয় ঝামেলা।
গন্ডগোলের খবর পেয়ে স্কুলে আসেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অরুণময় দাস। প্রধান শিক্ষক ও অভিযুক্ত চার শিক্ষককে নিয়ে বৈঠকে বসেন। অরুণময়বাবুর সামনেই মারধর শুরু হয়। তিনি জানিয়েছেন, সেই সময় উত্তেজিত হয়ে প্রধান শিক্ষক প্রথমে তারিফের গায়ে হাত তোলেন। তখনই বাকি চার শিক্ষক মণিরুলবাবুকে মারধর করে বলে অভিযোগ। আহত অবস্থায় ওই শিক্ষককে প্রথমে ফরাক্কার একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে রাতের দিকে ওই চিকিৎসককে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
প্রধান শিক্ষক বলেন, “কয়েকজন শিক্ষকের লিখিত অভিযোগে আমি নতুন রুটিন সাময়িকভাবে স্থগিত করি দিই। এরপরই আমার স্কুলের চারজন শিক্ষক স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অরুণময় দাসকে সঙ্গে নিয়ে আমার ঘরে ঢুকে বাকি শিক্ষকদেরকে বার করে দেন। ঘরে ঢুকেই তারিফ হোসেন আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শুরু করেন। আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। সেই সময় আমি প্রতিবাদ করলে শক্ত কিছু দিয়ে পিঠে,বুকে, পায়ে মারা হয়।” প্রধান শিক্ষককে মারধরের এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শিক্ষক মহম্মদ তারিফ হোসেন জানান, “প্রধান শিক্ষকই প্রথমে আমাকে কলার ধরে মারধর করার চেষ্টা করেন। আমি কেবলমাত্র আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছি। সেই সময় প্রধান শিক্ষক পড়ে যান। তাতেই তিনি আহত হয়েছেন।”
অন্যদিকে, তাঁর উপস্থিতিতেই স্কুলের মধ্যেই দুই শিক্ষকের মারামারি হয়েছে তা স্বীকার করে পদত্যাগ করেছেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অরুণময় দাস। তিনি বলেন, “একটি রুটিন নিয়ে গতকাল যে ঘটনাটি ঘটেছে তা সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত। আমি দুপক্ষকে থামানোর চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু পারিনি।” ফরাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম জানান, “আজ ঘটনাটি জানতে পেরেছি। দ্রুত আমি দুপক্ষের শিক্ষকদের নিয়ে বসে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.