ফাইল ছবি।
দীপঙ্কর মণ্ডল: কোনও লিখিত সরকারি নির্দেশ নেই। তা সত্ত্বেও মাধ্যমিকের প্রধান পরীক্ষকরা হোয়াটসঅ্যাপে নির্দেশ দিচ্ছেন, কয়েকদিনের মধ্যে খাতা জমা দিতে হবে। কিন্তু লকডাউন তো ওঠেনি। গণপরিবহন পুরোপুরি চালুও হয়নি। সবার গাড়ি বা মোটরবাইক নেই। এতেই প্রবল ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা। রীতিমতো আতঙ্কিত দূরের শিক্ষকরা। খানিকটা বাধ্য হয়ে অনেকেই প্রধান পরীক্ষকদের মুখের উপর বলে দিচ্ছেন, “সরকারের লিখিত নির্দেশ দেখান। মুখের কথায় খাতা জমা দিতে পারব না।” সব মিলিয়ে মাধ্যমিকের খাতা জমা দেওয়া নেওয়া নিয়ে কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলায় চলছে তুমুল অশান্তি।
জানা গিয়েছে, কেউ কেউ হাজার হাজার টাকা বাড়তি খরচ করে খাতার বান্ডিল নিয়ে প্রধান পরীক্ষকদের কাছে আসছেন। কিন্তু তাতেও বিপত্তি। অনেক ক্ষেত্রেই পাড়ার লোকজন বা আবাসনের বাসিন্দারা বাধা দিচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য, লকডাউনের সময়ে বাইরের লোক এলে কোভিড-১৯ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ প্রসঙ্গে শনিবার শিক্ষক সংগঠন বিজিটিএ মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে মেল করে একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছে। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সৌরেন ভট্টাচার্য্য পর্ষদকে বলেছেন, কলকাতা-সহ জেলায় একটি জায়গা নির্দিষ্ট করা হোক। প্রশাসনিক সাহায্য নিয়ে গাড়ি পাঠিয়ে সেই জায়গায় উত্তরপত্রগুলি দেওয়া-নেওয়া হোক। তাঁর আবেদনে এখনও আলাদা করে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পর্ষদ।
মাধ্যমিকের ব্যবস্থাপনায় খাতা নিয়ে আতান্তরে পড়েছেন পরীক্ষকরা। বেশি সমস্যায় দূরের জেলার শিক্ষকরা। অনেকেই যে স্কুলে পড়ান সেখান থেকে বহু দূরে থাকেন। খাতা দেখা হয়ে গেলেও তা জমা দেওয়ায় বিপত্তি দেখা দিচ্ছে। কয়েকজন পরীক্ষক জানিয়েছেন, দু’তিনটে জেলা পেরিয়ে তাঁরা প্রধান পরীক্ষকের কাছে খাতা জমা দিতে পারবেন না। এর মূল কারণ লকডাউন। বিশেষ অনুমতি চাই। গাড়ি ভাড়া পড়বে আকাশছোঁয়া। বেশ কিছু ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫হাজার টাকা পর্যন্ত প্রয়োজন। প্রশ্ন উঠেছে, সেই টাকা কে দেবে? পর্ষদ পরীক্ষকদের এই বাড়তি টাকা দেওয়ার দায়িত্ব নেয়নি। কর্তারা জানিয়েছেন, নিজেদের উদ্যোগেই পরীক্ষকদের কাজ করতে হবে। শিক্ষক সংগঠনগুলির বক্তব্য, লকডাউনের মধ্যে এই তুঘলকী সিদ্ধান্ত না নিলেও চলত! তবে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ এ বিষয়ে লিখিত নির্দেশিকা জারি করেছে। সংসদ জানিয়েছে, উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষকদের খাতা জমা দিতে হবে না। নির্দিষ্ট ছাত্র-ছাত্রী কত নম্বর পেয়েছে সেইটুকু জানিয়ে দিলেই চলবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.