সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: “আগে থেকেই রং খেলা চলছে। যে রক্তের হোলি খেলা তিনি খেললেন দিল্লির বুকে, তাতে আর আলাদা করে রং খেলার দরকার নেই।” করোনা আতঙ্কে প্রধানমন্ত্রীর হোলি না খেলার সিদ্ধান্তকে এভাবেই কটাক্ষ করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর আরও কটাক্ষ, “তিনি করোনা ভাইরাসের ভয়ে এবার রং খেলছেন না, এটা তো লজ্জার। দিল্লিতে গণহত্যা সংগঠিত করে লজ্জা পেলেন না! তখন তো তিন -চার দিন চুপ করে থাকলেন। বরং প্রয়োজনীয় কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা, তা জানতে পারেননি দেশবাসী।”
বুধবার পুরুলিয়ার সিধো–কানহো–বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছেছেন শিক্ষামন্ত্রী। আজ সেখানকার সমাবর্তন। তার আগে সিধো–কানহো–বিরসার আবক্ষ মূর্তির উন্মোচন হয় শিক্ষামন্ত্রীর হাত ধরে। সেখান থেকে রাজ্য সরকার-রাজ্যপালের মধ্যে বিতর্ক নেই বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি। বলেন, “যদি বিতর্ক থাকে তাহলে আমরা জানি সেই বিতর্কে কী করে জল ঢেলে দিতে হয়, এবং আমরা জল ঢেলে দিই।”
এরাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের পদে বসার পর থেকেই জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের দ্বন্দ্ব লেগেই রয়েছে। যার জেরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তবে রাজ্য সরকারের পরামর্শ মেনে বাজেট বক্তৃতার পর সেই দ্বন্দ্বের রেশ কিছুটা কাটে। বুধবার পুরুলিয়ার সিধো–কানহো–বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান থেকে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “উনি যদি সমাবর্তনে আসতে পারেন, খুশি হব। না আসতে পারলে আমি তাঁর প্রতিনিধি হিসাবে আছি। তিনি নিশ্চয়ই খুশি হবেন।”
রাজ্যপালের সঙ্গে যে এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, এদিন সেকথাও জানান শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর কথায়, “আগের সরকার শুধু শিলান্যাস করত। কোনও বাস্তবায়ন করতে পারত না। মুখ্যমন্ত্রী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্তার ঘটিয়েছেন। উৎকর্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন।” তাই পুরুলিয়ার মত এলাকায় শিক্ষার উন্নয়নে যাতে নিজেরাই বিবাদে না জড়িয়ে পড়েন, সেই পরামর্শ দিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
আজ পুরুলিয়ার সিধো–কানহো–বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘জঙ্গলমহল স্বীকৃতি’ সম্মান দেওয়া হবে। জঙ্গলমহলের জেলাগুলি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে গিয়েছে, সেই কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তাঁকে এই সম্মাননা প্রদান। তবে আজ মুখ্যমন্ত্রী এই বিশ্ববিদ্যালয়ে না আসতে পারায় তাঁর তরফে শিক্ষামন্ত্রী এই সম্মান গ্রহণ করবেন। বুধবার সিধো–কানহো–বিরসার মর্মর মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, সন্ধ্যারানি টুডু, জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপক কর-সহ আরও একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.